ঈশ্বরদীতে পৌর আ.লীগের কার্যালয়ের দখল নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১০

পাবনা১পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন ঘিরে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসহাক মালিথা গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইসহাক মালিথা গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। ৬ বছর পর রবিবার সন্ধ্যায় সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু দলীয় কার্যালয়ে একক আধিপত্য বিস্তার করতে যান। এতে বিবাদমান দু’গ্রুপের মধ্যে বচসার সৃষ্টি হয়। সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় নেতাদের ফুল দেওয়া নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে মিন্টু ও ইসহাকের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে খবর পেয়ে উভয় পক্ষের অনুসারী ও কর্মীরা জড়ো হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। প্রাণ ভয়ে সাধারণ মানুষ দিকবিদিক ছুটাছুটি শুরু করে।

পাবনা২সংঘর্ষের ঘটনায় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইসহাক মালিথা, মুলাডুলি ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি বককার মালিথা, ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের ছেলে রনিসহ প্রায় ১০ জনের মতো নেতাকর্মী আহত হন। এদের মধ্যে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত রনিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের জামাত-শিবিরের অনুসারী উল্লেখ করে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, ‘জামাত-শিবিরের অনুসারীরা আসন্ন নির্বাচনি পরিবেশ নষ্ট করতে একের পর এক অপতৎপরতা চালাচ্ছে। অপ্রীতিকর ঘটনার পেছনে তারাই দায়ী।’

তবে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইসহাক করেন, দীর্ঘদিন ধরেই আবুল কালাম আজাদ মিন্টু নোংরামি করে আসছেন। এটা নতুন কিছু নয়। মাঝে মধ্যেই দলীয় কার্যালয়ের একক দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন তিনি।

পাবনা৩তিনি অভিযোগ করেন, ‘কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকতেই পরিকল্পিতভাবে পৌর মেয়র এই ন্যাক্কারজকন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা স্বচক্ষে ঘটনা দেখেছেন এবং গুরুতর অভিযোগগুলো তাদের অবহিত করা হয়েছে।’

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্থা (ওসি) শেখ নাসির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ও সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুসহ নেতৃবৃন্দদের ফুলের শুভেচ্ছা জানানোর সময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে দফায় দফায় দু’গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে সমঝোতার পরও দফায় দফায় এসব ঘটনা ঘটে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।