এ বন্দরের সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীরা বলেন, শ্রমিক আন্দোলন উস্কে দিয়ে এই বন্দরকে ধ্বংস করতে পর্দার আড়ালে থেকে একটি পক্ষ নানা কূট কৌশল চেলেছিল। এদের মধ্যে বিভিন্ন পক্ষের নাম পাওয়া যায়। ষড়যন্ত্রকারীদের এসব কূটচালে প্রায় ধ্বংসের অবস্থায় চলে গিয়েছিল এই বন্দর। ২০০৫ সালেও জাহাজের অভাবে এই সমুদ্র বন্দর ও মোংলার পশুর চ্যানেল খাঁ খাঁ করেছিল। মাসের পর মাস জাহাজ শূন্য থাকায় শ্রমিকদের মাঝে হাহাকার শুরু হয়। নানা ষড়যন্ত্রের মুখে বন্দরটি যখন মৃতপ্রায় তখন এই বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীরা।
এসব তথ্য দিয়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, অতীতের সেই খারাপ অবস্থায় এখন আর নেই এই বন্দর। ক্ষমতাসীন সরকারের নানা পদক্ষেপে এ পরিস্থিতি পাল্টেছে। জাহাজ বেড়েছে, ব্যবসায়ীরাও বিনিয়োগ করছেন, কর্মচাঞ্চল্যও বেড়েছে, রাজস্ব আয়ও বেড়েছে।
১. আউটার বারে ড্রেজিং
২. ইনার বারে ড্রেজিং
এই দুটি ড্রেজিং বাস্তবায়ন শেষ হলে জেটি থেকে হারবাড়িয়া পর্যন্ত ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে।
৩. ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম। এর মাধ্যমে মোংলা বন্দরে আগত ও বের হয়ে যাওয়া জাহাজ নিরাপদ পাইলটিং ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা সম্ভব হবে।
৪. সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন। এর মাধ্যমে মোংলা বন্দরে সমুদ্রগামী জাহাজে সুপেয় পানির চাহিদা মেটানো যাবে।
৫. মাস্টার প্ল্যান ফর মোংলা পোর্ট। বন্দরের কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচি প্রণয়নে এই মাস্টার প্ল্যান তৈরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৬. মোংলা বন্দরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ। এসব যন্ত্রপাতি সংগ্রহ হলে বন্দরের কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
৭. মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা। একটি আধুনিক সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে বন্দর এলাকায় চলাচলকারী বিভিন্ন জলযান এবং শিল্পকারখানা হতে সকল ধরনের বর্জ্য সংগ্রহ করে পরিবেশসম্মত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
৮. মোংলা বন্দরের জন্য ৬টি জলযান সংগ্রহ। এসব জলযান সংগ্রহের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে এসবের মাধ্যমে সমুদ্রগামী জাহাজ সুষ্ঠু ও দক্ষতার সঙ্গে হ্যান্ডেল করা।
৯. সিকিউরিটি সিস্টেম বা আধুনিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি।
১০. আপগ্রেড অব মোংলা পোর্ট। এই বন্দরের সড়ক ছয় লেনসহ বাইপাস সড়ক চার লেনে উন্নীত করা। এসব সড়কের কাজ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রামের চেয়েও মোংলার সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব অনেকাংশে কমে যাবে। এছাড়া এ প্রকল্পের মধ্যে থাকছে ১০ হাজার গাড়ি একসঙ্গে রাখার আধুনিক কার ইয়ার্ড, হাসপাতাল, উন্নতমানের অফিসার্স আবাসিক ভবন ও বন্দর চেয়ারম্যানের বাংলো।
বন্দর সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের অন্যতম নীতিনির্ধারক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক আরও বলেন, মোংলা বন্দরকে অর্থনৈতিকভাবে পুরোদমে সচল রাখতে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি হয়েছে। তারা আমাদের এই বন্দর থেকে পণ্য লোড-আনলোড করবে। এই মুহূর্তে হাতে নেওয়া ১০টি প্রকল্পকে ঘিরে মহাপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এজন্য সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।
এখনও এই বন্দরকে অচল করতে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে মেয়র আব্দুল খালেক বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন এসব অপশক্তির ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না, সে যে দলেরই হোক।