প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তা আত্মসাৎ: সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এবার তদন্ত

 

আরিফুর রহমান চৌধুরী শামীমগাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের ১১ নম্বর খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাময়িক বরখাস্ত সেই চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী শামীমের বিরুদ্ধে এবার তদন্তে মাঠে নেমেছে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি। বুধবার (২৩ সেপ্টেস্বর) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সরেজমিনে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের রংপুর বিভাগীর কমিশনার।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকায় আত্মীয়-স্বজনের নাম অর্ন্তভুক্তসহ নানা অনিয়ম এবং সুবিধাভোগীদের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে গত ২৪ জুন চেয়ারম্যান আরিফুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। একই সঙ্গে কেন তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না তা জানতে কারণ দর্শনো নোটিশ দেওয়া হয় আরিফুর রহমান। কিন্তু নির্ধারিত সময় চলে যাওয়ার পর তার দেওয়া জবাব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। যে কারণে বিষয়টি সরেজমিন তদন্তের জন্য বিভাগীয় কমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে মুঠফোনে খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মো. সাজু মিয়া জানান, দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে রংপুর বিভাগীয় কমিশানার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তবে তদন্তের বিষয়টি তাকে বা পরিষদের সচিবকে কেউ জানায়নি। এছাড়া তদন্তের বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি অভিযোগকারী, ভুক্তভোগী এবং সাক্ষীদের। তদন্ত কার্যক্রমে সাময়িক বরখাস্ত চেয়ারম্যান আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত যাচাই করা হয়। কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তবে যেসব সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে তারা সবাই আরিফুর রহমানের মনোনীত লোকজন বলে অভিযোগ তার।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান জানান, ’তদন্তের সময় তদন্ত কর্মকর্তা বিভিন্ন অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপন করি। এর আগে কারণ দর্শনো নোটিশের জবাবেও আমার বক্তব্য তুলে ধরি।’ তবে তিনি পূর্ণ তদন্ত চেয়ে কোনও আবেদন করেননি বলে জানান।

প্রসঙ্গত, করোনা দুর্যোগকালে প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকায় স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়ম ও সুবিধাভোগীদের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে গত ৮ জুন সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন। ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় জেলাজুড়ে। পরে সরেজমিন তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে গত ১৬ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রতিবেদন পাঠায় জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটি। এদিকে, বর্তমানে সাময়িক বরখাস্তের পর আরিফুর রহমান চৌধুরী শামিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে নয় ছয়, অনিয়মসহ নানা অপকর্মের বিস্তর অভিযোগের বিষয়ে মুখ খুলছেন অনেক ভুক্তভোগী ও স্থানীয় এলাকাবাসী। 

আরও পড়ুন- মানবিক সহায়তার টাকার তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ