পাল্টে যাবে গল্লামারী থেকে জিরােপয়েন্টের দৃশ্যপট

IMG_20200930_164313

খুলনার ময়লাপােতা থেকে জিরােপয়েন্ট পর্যন্ত মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের মধ্যে বেশ কিছু কাজ সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের অংশের গল্লামারী-জিরােপয়েন্ট পর্যন্ত উভয়পাশে এক কিলােমিটার দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে, সার্ভিস রােড এবং একটি ফুটওভার ব্রিজের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবর উপাচার্য প্রফেসর ড. মােহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান স্বাক্ষরিত অনুরােধ পত্রে উল্লখ্য করা হয়েছে, এই প্রকল্পের অধীনে গল্লামারী থেকে জিরােপয়েন্ট পর্যন্ত এক কিলােমিটার অংশে রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভূমি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং গল্লামারীতে নির্মিত মহান স্বাধীনতার স্মতিসৌধটিও এই মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। জিরাপয়েন্ট হলাে খুলনার পশ্চিমাংশের প্রবেশ দ্বার। সেখান থেকে গল্লামারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত হাজার শিক্ষার্থী ও সহস্রাধিক শিক্ষক, কর্মকতা-কর্মচারী এবং হাজার হাজার সাধারণ মানুষ খুলনা শহর প্রবেশের আগে মহাসড়কের এই অংশ ব্যবহার করেন। নানা ধরনের অসংখ্য যানবাহনও এই মহাসড়কে চলাচল করে। ফলে ব্যস্ততম এই মহাসড়কটির জিরােপয়েন্ট থেকে গল্লামারী এক কিলােমিটার চার লেন করার পাশাপাশি এর উভয় পাশে সার্ভিস রােডসহ দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগটের আশপাশে শিক্ষার্থী ও সাধারণের নিরাপদ পারাপারের জন্য একটি ফুটওভার ব্রিজের অত্যন্ত প্রয়ােজন। এ ব্যাপার খুলনা উন্নয়ন কর্তপক্ষের (কেডিএ) ডিটেইল এরিয়া ডেভেলপমেন্ট প্লানেও (ডিএডিপি) বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ২০১০ সালে মন্ত্রণালয়ে প্রদানকৃত অনুরােধপত্রে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত গল্লামারী থেকে জিরােপয়েন্ট এক কিলোমিটার অংশের নাম শহীদ সরণি এবং একই সঙ্গে এখানে স্থপিত মহান স্বাধীনতার স্মৃতিসৌধ ও সংলগ্ন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সর্বসাধারণের যাতায়াত সুবিধায় উভয় পার্শ্বে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিলা। কিন্তু বর্তমান অনুমােদিত চার লেন সড়ক প্রকল্পে এই এক কিলােমিটার অংশে প্রস্তাবিত ওয়াকওয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর খুলনা সফরকালে শহীদ হাদিস পার্কে এক অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি করপোরশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রস্তাবসহ একটি ডিজাইন উপাচার্য তার নিকট হস্তান্তর করেন। এসময় মন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই অংশে প্রস্তাবিত ওয়াকওয়ে করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। বর্তমান প্রকল্পটির সংশােধিত প্রস্তাব প্রণয়ন করার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।

২০১০ সাল থেকেই কেসিসি মেয়র এ ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিষয়টি খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) প্রধান প্রকৌশলী, কেডিএর চেয়ারম্যান, খুলনা জেলা প্রশাসক, সওজ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকেও বিষয়টি অবহিত করে পত্র দেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়র জনসংযাগ ও প্রকাশনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এস এম আতিয়ার রহমান নিশ্চিত করেন। পত্রের সঙ্গে একটি দৃষ্টিনন্দন থিম্যাটিক ডিজাইনও দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের অংশের প্রায় দেড়শ ফিট চওড়া সড়কের প্রতি দুই লেন ত্রিশ ফিট করে ষাট ফিট প্রশস্ততা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। মাঝখানে দশ ফুট আইল্যান্ড, উভয় পাশে পনের ফিট করে সার্ভিস রােড রাখারও প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই সার্ভিস রােড দিয়ে রিকশা-ভ্যানসহ নন-মােটরাইজড ভেইক্যাল চলার সুযােগ থাকবে। ফলে মূল চার লেন সড়কে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমে যাবে। এছাড়া দশ ফুট প্রশস্ত মাস্টার ড্রেনসহ দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ের দৃশ্য রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা পারাপারের জন্য একটি ফুটওভার ব্রিজের দৃশ্য রয়েছে। সড়কের আইল্যান্ড দশ ফুট প্রশস্ত রাখা এবং সার্ভিস রােড পনের ফিট রাখার যুক্তিকতা হচ্ছে- ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি যাতে ছয় লেন বা আট লেন করার সুযােগ থাকে এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে বা উড়াল সড়ক করার ক্ষেত্রেও কােনাও প্রতিবন্ধকতা না হয়।