রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে ৩ পুলিশের সাক্ষ্য

রায়হান উদ্দিনসিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান উদ্দিন নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিন পুলিশ কনস্টেবল। ঘটনার দিন তারা পুলিশ ফাঁড়িতে ছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ পরিদর্শক মুহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সোমবার (১৯ অক্টোবর) বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ কনস্টেবল দেলওয়ার হোসেন, সাইফুর রহমান ও শামীম মিয়াকে আদালতে নিয়ে আসেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুর রহমানের আদালতে তারা আড়াই ঘণ্টা সাক্ষ্য দেন। সোমবার বিকাল ৫টার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। 

মুহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দেলওয়ার, সাইফুর ও শামীম মিয়া আদালতে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বরাখাস্ত এসআই আকবর হোসেনকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাকে ধরার জন্য পিবিআইয়ের একাধিক টিম কাজও করে যাচ্ছে।’

আকবর দেশে না দেশের বাইরে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তাকে ঘটনার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য বলা কষ্টকর, আকবর কোথায়।’ 

উল্লেখ্য, রায়হান নামের ওই যুবককে বন্দরবাজার থানা পুলিশ গত ১০ অক্টোবর বিকালে আটক করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল নম্বর থেকে ছেলের ফোন পান রায়হানের বাবা। ফোনে ফাঁড়িতে তাকে আটকে রেখে ছেড়ে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানান রায়হান। বাবাকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করে রায়হান। ছেলেকে বাঁচাতে ভোরে তার বাবা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে তাকে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে। পরে সকালে এলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলোও ওপড়ানো ছিল। পুলিশ এরপর দাবি করে রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেওয়ায় মৃত্যু হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের ফুটেজে এর কোনও প্রমাণ মেলেনি। রবিবার সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে তার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকালে ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। 

আরও পড়ুন:

পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যু: ৪ পুলিশ বরখাস্ত, ৩ জনকে প্রত্যাহার

পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

মোবাইল নম্বরটি কার?

গণপিটুনির প্রমাণ মেলেনি সিসিটিভি ফুটেজে, দাবি কাউন্সিলরের

পুলিশ হেফাজতে যুবককে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ