চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ থামছে না

IMG_20201009_091809

করোনার দাপটের মধ্যেও সাদা সোনা খ্যাত চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ থামছে না। অভিযান জেল-জরিমানা করেও বন্ধ হচ্ছে পুশ। অসাধু ব্যবসায়ীরা বাগদা ও গলদা চিংড়িতে ওজন বাড়ানোর জন্য জেলিসহ নানা রকম অপদ্রব্য পুশ করেই যাচ্ছেন। ফলে রফতানি করা এসব চিংড়ি বিদেশ থেকে ফেরত আসছে। দিন দিন চাহিদা কমছে, আর বিদেশি বাজার নষ্ট হচ্ছে। আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবেও চিংড়িতে মড়ক লেগে উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে।

খুলনার নতুন বাজার ও রূপসায় সাত শতাধিক ডিপো রয়েছে। এই এলাকার ডিপোর চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করা হয়। অভিযানে ধরাও পড়ে। সিরিঞ্জ দিয়ে চিংড়িতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ফিটকিরির পানি, ভাতের মাড়, সাগুদানা, এরারুট, লোহা বা সীসার গুলি, মার্বেল, ম্যাজিক বল, জেলিসহ বিভিন্ন পদার্থ; যা মাছের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ১০৫টি অভিযানে পুশ করা এক হাজার ৬২০ কেজি চিংড়ি জব্দ করে প্রশাসন। জরিমানা করা হয় ৯ লাখ দুই হাজার টাকা। কারাদণ্ড হয় তিন জনের। গত ৮ অক্টোবর রাতে র‌্যাব-৬ ডুমুরিয়ার শাহাপুর এলাকায় ৫০০ কেজি পুশকৃত চিংড়ি জব্দ করে। এসময় ২টি ডিপো মালিককে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগে গত ৬ অক্টোবর রূপসা উপজেলার বাগমারা এলাকায় অভিযানের তিন ব্যক্তিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, 'মৎস্যজাত দ্রব্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) আধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ১০ ধারায় (২) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৫১ ধারা অনুযায়ী চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। গত ৮ অক্টোবর রাতে ডুমুরিয়ায় অভিযান চালিয়ে এই আইনের আওতায় মৎস্য ব্যবসায়ী ডিপো মালিক সত্য প্রসাদ ও শম্পা মল্লিককে ২০ হাজার টাকা করে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।'

খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডুমুরিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জীব কুমার দাশ বলেন, 'করোনা ভাইরাসের ভয়ে মানুষ ভীত হলেও চিংড়িতে পুশ করায় পিছপা হচ্ছে না। এর ফলে রফতানি করার পর বিদেশে দেশের সম্মান নষ্ট হচ্ছে। তাই প্রশাসন থেকে বিষয়টিকে গুরুত্বে সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। সেভাবেই নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।'

খুলনা জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (মিডিয়া) দেবাশীষ বসাক জানান, যেকোনও অপরাধের বিরুদ্ধে সব সময়ই অভিযান পরিচালনা করা হয়। চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধে জেলা প্রশাসন সজাগ রয়েছে।

র‌্যাব-৬ এর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া অফিসার এএসপি মো. মাহবুব উল আলম জানান, চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধ করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।