নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে খারাপ আবহাওয়ায় স্পিডবোটে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে গিয়ে পাঁচ যাত্রী নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ মেরিন কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন পটুয়াখালী নৌবন্দর কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমান। একই ঘটনায় রাঙ্গাবালী থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেছেন কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন। পটুয়াখালীর আগুনমুখা নদীতে গত বৃহস্পতিবার ওই স্পিডবোট ডুবে এ ঘটনা ঘটে।
শনিবার (২৪অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে খাজা সাদিকুর রহমান বাদী হয়ে বাংলাদেশ মেরিন কোর্টে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ায় সাগরকূলবর্তী এলাকায় নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল বুধবার রাত থেকে। কিন্তু ওই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অসাধু ব্যবসায়ীরা আগুনমুখা নদীতে স্পিডবোট চলাচল অব্যাহত রেখেছিল। তিনি জানান, স্পিডবোটে ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী উঠিয়ে প্রচণ্ড ঢেউয়ের মধ্যে চলাচল করায় সেটি দুর্ঘটনা কবলিত হয়। তাছাড়া যাত্রীদের জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামাদি দিতেও ব্যর্থ ছিল স্পিডবোট চালক। যে কারণে বোট পরিচালনাকারী এবং বোটচালক সমান অপরাধ করায় তাদেরকে আসামি করা হয়েছে।
দ্রুত আসামিদের গ্রেফতারের স্বার্থে তাদের নাম জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।
নৌবন্দর কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর জানান, নজিরবিহীন শাস্তির আওতায় আনা হবে আসামিদের যেন উপকূলীয় এলাকায় আর কেউ এমন অপরাধ না করে।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আলী আহম্মেদ জানান, এ বিষয় রাঙ্গাবালীর বাহেরচর কৃষি ব্যাংক শাখার ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রাঙ্গাবালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। অপরাধীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার শেষ বিকালে রাঙ্গাবালীর কোড়ালিয়া ঘাট থেকে লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত অর্থাৎ ১৮জন যাত্রী নিয়ে পাশের উপজেলা গলাচিপার পানপট্টি ঘাটের উদ্দেশে আসছিল। মাঝপথে খরস্রোতা আগুনমুখা নদীতে প্রচণ্ড ঢেইউয়ের মধ্যে পড়ে বোটটি তলা ফেটে ডুবে যায়। এর দেড় ঘণ্টা পর সাঁতরে ও মাছ ধরার ট্রলারে মোট ১৩ জন যাত্রী তীরে উঠতে পারলেও পাঁচজন যাত্রী নিখোঁজ ছিল। পরে বিভিন্ন সংস্থা অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর আজ ভোরে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে।