যশোরে গণসংবর্ধনা: চরম মাত্রায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

123036423_389481678890721_3139101699154776557_n

যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারকে সংবর্ধনা দিয়েছে নাগরিক কমিটি। শনিবার (৩১ অক্টোবর) যশোর টাউন হল মাঠের রওশন আলী মঞ্চে এই আয়োজনে সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। এই করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় কোনওরকম স্বাস্থ্যবিধি না মেনে এই কর্মসূচি সম্পন্ন করা হয়েছে। উপস্থিত মানুষের অধিকাংশের মুখেই ছিল না মাস্ক। ছিল না সামাজিক দূরত্বের বালাই।
আগামী শীতে বিশ্বব্যাপী করোনার আরও এক ঢেউ আসার আশঙ্কায় যেখানে সরকার নাগরিকদের আগাম সতর্ক করে যাচ্ছে, সেই পরিস্থিতির মধ্যেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন থেকে লোক জমায়েত করে পালন করা হলো এই অনুষ্ঠান।

শনিবার বেলা ৩টায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। যশোরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান।

নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত শাহীন চাকলাদার এমপি বলেন, 'দীর্ঘদিন জগদ্দল পাথরের মতো আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু যশোরের তৃণমূলের মানুষ সেই পাথর সরিয়ে আজ আমাকে এই আসনে বসিয়েছেন। তৃণমূলের মানুষের কাছে আমি চিরঋণী হয়ে আছি।' তিনি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যশোরের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

123008245_398113127864443_11014771712084383_n

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্য সচিব হারুন অর রশিদ। তিনি শাহীন চাকলাদারকে যশোর উন্নয়নের কারিগর দাবি করে বলেন, 'তার নেতৃত্বে যশোর থেকে সন্ত্রাস ও দুর্নীতি দূর করা হবে।'

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ, যশোর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের জেলা সেক্রেটারি ডা. কামরুল ইসলাম বেনু, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প উদ্যোক্তা সমিতির সভাপতি সাকির আলী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের জেলা সেক্রেটারি সানোয়ার আলম খান দুলু, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অসিম কুণ্ডু, ইছালি ইউপি চেয়ারম্যান এসএম আফজাল হোসেন, মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শাহেদা বানু শিল্পী, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন গণপরিষদের সাবেক সদস্য মঈনুদ্দিন মিঁয়াজী, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যশোর ইনস্টিটিউটের সহ-সভাপতি কাসেদুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।

123386877_706440556639838_6417246980003518019_n

দুপুর আড়াইটার পর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন। যাদের বেশিরভাগই মুখে মাস্ক ছিল না। যদিও সকাল থেকেই যশোর পৌরকর্তৃপক্ষ সংবর্ধনাস্থলের পাশের রাস্তাগুলোতে ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানি স্প্রে করে। প্রতিটি মোড়ে অবস্থান নিয়ে পৌরকর্মীরা আগন্তুকদের গায়ে স্প্রে করে। প্রবেশস্থলেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

যারা মাস্ক পরে ছিলেন, সংবর্ধনাস্থলে পৌঁছানোর পর বেশিরভাগই তা মুখের নিচে টেনে রাখেন। সময় বাড়ার পর মানুষের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। একসময় টাউন হল মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। জনস্রোত মাঠ ছাড়িয়ে পাশের রাস্তায় গিয়ে থামে।

প্রসঙ্গত, এই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে সফল করতে গত কয়েকদিন ধরে যশোরে ব্যাপক মাইকিং করা হয়। জেলাময় সাঁটানো হয় চার রঙের পোস্টার। মোড়ে মোড়ে টাঙানো হয় ফেস্টুন, ব্যানার আর বিলবোর্ড।

 আরও খবর:

করোনার ঝুঁকি উপেক্ষা করেই যশোরে গণসংবর্ধনা (ফটোস্টোরি)