দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকায়দায় নাটোরবাসী



0a277201bddbd89ffc7db21c34093305-5afe62486300a
করোনার পাশাপাশি বন্যার পর এবারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বেকায়দায় পড়েছেন নাটোরের সাধারণ মানুষ। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অত্যধিক দাম ও ক্রয়ক্ষমতার বাইরে হওয়ায় অনেকেই পরিবারের প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী কিনতে পারছেন না। এতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

তবে এ পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং না হওয়া এবং ব্যবসায়ীদের অযৌক্তিক মুনাফা লোটার বিষয়টিকে দায়ী করেছেন সাধারণ ভোক্তারা।

সদর উপজেলার ভাটোদাঁড়া গ্রামের দিনমজুর জামিল জানান, তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির জন্য দীর্ঘদিন ধরে তার কাজ বন্ধ। এ অবস্থায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যেরও দাম বেড়েছে, অনেকক্ষেত্রে তা নাগালের বাইরে। তাই পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে পারছেন না। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম খাবারে জীবন ধারণ করতে হচ্ছে তাদের।

বেজপাড়া এলাকার কৃষক নূর ইসলাম জানান, করোনা ও বন্যার রেশ এখনও কাটেনি। অধিকাংশ জমিই এখনও চাষাবাদের আওতায় আসেনি। ফলে অন্যের জমিতেও কাজ নিয়মিত পাচ্ছেন না। এর ওপর বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম আকাশচুম্বি। এতে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম খাদ্য সামগ্রী দিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।

সরেজমিনে সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া হাট, নলডাঙ্গা, বাগাতিপাড়া, সিংড়া, বড়াইগ্রামের বনপাড়াসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এসব বাজারে খুচরায় শুকনো মরিচ ২২০ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, রসুন ৯০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, করল্লা ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, পুঁই শাক ৩০, সিম ১৬০, আলু ৫০, হাইব্রিড (হল্যান্ড) আলু ৪৫, কুঁড়ি কচু ও পটল ৪০, বরবটি ৭০, ফুলকপি ৮০ টাকা কেজি ও লাউ আকৃতিভেদে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে চাল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, সিলভার কার্প মাছ ১২০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০, শরপুঁটি ১৩০, বোয়াল ৩০০-৩৫০ টাকা ও টাকিয়া মাছ ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাগাতিপাড়া উপজেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি আব্দুল মজিদ জানান, বাগাতিপাড়াসহ সব উপজেলা ও জেলায় এই কমিটি থাকলেও তেমন কাজ করে না। এর বাইরে প্রশাসনিক মনিটরিং তেমন না থাকার সুযোগে ব্যাবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করছেন। এক্ষেত্রে জেলার প্রতিটি বাজার ও হাটে প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার শরীফ শাওন বলেন, বন্যায় নাটোরে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় দাম বেড়েছে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জেলা প্রশাসক শাহ রিয়াজ কয়েকদফা বৈঠকে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির কথা হয়। আলুর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে অভিযান ও জরিমানা করা হয়েছে। বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।