ধর্ষণের পর ব্ল্যাকমেইল করে ৩৫ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ

বরিশাল

ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে সেটি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী তিন সন্তানের জননীকে সাত মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কৌশলে ৩৫ লাখ টাকা ধার নিয়ে আর ফেরত দেয়নি ধর্ষক। সেই টাকা ফেরত চাওয়ায় ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনায় মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ধর্ষক ও তার এক সহযোগীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হচ্ছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামের মৃত ছাদেক ভাট্টির ছেলে আনিচুর রহমান ভাট্টি ও একই গ্রামের মৃত নজের আলী হাওলাদারের ছেলে হালিম হাওলাদার।

আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, আসামি আনিচুর গত ২ জানুয়ারি রাতে পুলিশ তাকে ধরতে এসেছে এই মিথ্যা তথ্য দিয়ে নির্যাতিতার ঘরে আশ্রয় নেয়। এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা মতো আনিচের সহযোগী হালিম বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। আনিচ রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রবাসীর স্ত্রী কাছে পানি খেতে চাইলে ওই গৃহবধূ পানি নিয়ে ঘরের দ্বিতীয়তলায় যায়। এ সময় তাকে ধর্ষণ করে আনিচ। মান-সম্মানের ভয়ে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনা কাউকে না জানিয়ে চুপচাপ থাকেন। ধর্ষক আনিচ তার মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রেখেছে জানিয়ে তার কথা অনুযায়ী না চললে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টানা সাত মাস ধর্ষণ করে ভুক্তভোগীকে। এমনকি আনিচ মাছের ঘের করার জন্য ওই গৃহবধূর কাছ থেকে তার স্বামীর প্রেরিত ৩৫ লাখ টাকা ধার নেয়। ওই গৃহবধূ স্বামীর বিদেশ থেকে আসার সময় হয়েছে জানিয়ে চলতি বছরের ৩ জুলাই আনিচের কাছে ধারের টাকা ফেরত চায়। তখন টালবাহানা শুরু করে আনিচ।

এরপর গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যার পরে ভুক্তভোগী রান্নাঘরে যাওয়ার সময়ে ধর্ষক আনিচ ও তার সহযোগী হালিম তাকে জাপটে ধরে। এ সময় আনিচ ধর্ষণের চেষ্টা চালালে গৃহবধূর চিৎকারে তার ছেলে (১৫) এসে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ধর্ষক আনিচ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি, ভিডিও এবং ভয়েস ম্যাসেজ গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়। এমনকি প্রবাসে থাকা তার স্বামীর কাছেও তা প্রেরণ করে। অবশেষে স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই ফোরকান জানান, নির্যাতিতাকে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।