সেই বাবা-মায়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিলেন দুই ছেলে

জমি লিখে নিয়ে ছেলোর বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছিলেন বৃদ্ধ বাবা-মা। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় গ্রামবাসীদের চাপে তাদের ঘরে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন তাদের দুই ছেলে।

জমি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার আড়াই মাস পর গ্রামবাসীর তোপের মুখে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন দুই ছেলে। এরপর রবিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে গ্রাম্য সালিশে মাতব্বররা ওই দুই ছেলেকে তাদের বাবা-মাকে এক মাস করে ভরণ পোষণের দায়িত্ব দিয়েছেন। গ্রাম্য সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাবলু ও কাদের তাদের মা মেহেরুন বেগম (৬৫) এবং বাবা আব্দুল খালেক (৭০)-এর ভরণ পোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। এমনই ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রামে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা খান বাহাদুর বলেন, ‘জমি লিখে নিয়ে দুই ছেলে তাদের বাবা-মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। পরে গ্রামবাসীর সঙ্গে নিয়ে আমরা তাদের বাড়িতে উঠিয়ে দিয়েছি। এরপর আমরা গ্রামবাসীকে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য বসেছিলাম। পরে সালিশে ওই অসহায় বাবা-মাকে তাদের ছেলেরা এক মাস করে ভরণপোষণ করবেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এ ঘটনায় ওই দুই ছেলের কাছে লিখিতও (লিখিত চুক্তি) নেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, প্রায় ৩ বছর আগে বয়সের ভারে ন্যুব্জ বাবা-মা তাদের দুই ছেলের নামে ৬ শতাংশ করে ১২ শতাংশ বাড়িভিটা লিখে দেন। এরপর গত ৩ মাস আগে বৃদ্ধ আব্দুল খালেক তার স্ত্রী মেহেরুন বেগমের নামে চকের ৩২ শতাংশ জমি লিখে দেন। পরে তাদের দুই ছেলে বাবলু ও কাদের সেই ৩২ শতাংশ জমি লিখে নিতে বাবা-মাকে চাপ প্রয়োগ করেন। এই ৩২ শতাংশ জমি লিখে না দেওয়ার কারণে দুই ছেলে তাদের বাবা-মাকে প্রায় আড়াই মাস আগে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে বৃদ্ধা মেহেরুন বেগম স্বামীসহ ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর সম্প্রতি ওই গ্রামের রাস্তার পাশের জমিতে অসহায় বাবা-মা চৌকি বসিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার (২০ নভেম্বর) রাতে বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বিভিন্ন মহলে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ওইদিন রাতেই গ্রামবাসীরা অসহায় বাবা-মাকে তাদের বাড়িতে তুলে দেন। এ সময় তাদের ছেলেদের সঙ্গে গ্রামবাসীর হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।