অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামীসহ আটক ৩




বরিশালবরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী অনিমাকে (২৮) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যার পর মরদেহ গুমের চেষ্টাকালে নিহতের স্বামী, ভাসুর ও জা’কে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। এ ঘটনায় বুধবার (২৫ নভেম্বর) নিহতের ভাই গোপাল হালদার বাদী হয়ে আটক তিন জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুই জনকে আসামি করে বানারীপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহতের স্বামী উপজেলার বিশারকান্দি গ্রামের বৈকুন্ঠ জয়ধরের ছেলে নরেন জয়ধর এবং নিহত অনিমা বিশারকান্দি ইউনিয়নের মরিচবুনিয়া গ্রামের প্রয়াত মতিলাল হালদারের মেয়ে। এর পূর্বে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

মামলার আসামি নিহতের স্বামী নরেন জয়ধর, তার ভাই নারায়ণ জয়ধর ও নরেনের বৌদি কবিতাকে বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

বাদীর অভিযোগ, হিন্দু প্রথা অনুযায়ী অনিমার সঙ্গে নরেন জয়ধরের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বরকে সোনার অলঙ্কার, আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্রসহ প্রায় দেড় লাখ টাকার মালপত্র ও নগদ এক লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। বিয়ের পর থেকে নরেন তার ভাই নারায়ণ ও বৌদি কবিতার অনিমার কাছে নগদ অর্থ দাবি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলো।

দাবি করা যৌতুকের টাকা দিতে অনিমা অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতন করেও তা আদায় করতে না পেরে গত এক বছর আগে নরেন ঢাকায় গিয়ে আবার বিয়ে করে। এর কিছুদিন পরে বাড়িতে ফিরে এসে অনিমার কাছে ১০ কাঠা জমি ও নগদ অর্ধ লাখ টাকা দাবি করে নরেন। এর মধ্যে অনিমা ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুনরায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করার এক পর্যায়ে অনিমার মৃত্যু হয়। রাতে মরদেহ গুম করার জন্য আসামিরা স্থানীয় মরিচবুনিয়া বাজার এলাকা অতিক্রমকালে এলাকাবাসী তাদের আটকে মারধর করে পুলিশে খবর দেয়। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার ও তিন জনকে থানায় নিয়ে যায়।

বানারীপাড়া থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, হত্যা মামলা নেওয়ার পাশাপাশি অনিমার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই মামলায় আটকদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।