তিন সন্তানকে বিষ খাওয়ানোর কথা স্বীকার করেছেন মা

Habiganj Pic 2

হবিগঞ্জে তিন শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা চেষ্টা করেছেন মা। তবে তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হলেও বাকি দুজন প্রাণে বেঁচে গেছেন। ঘটনার এক বছর পুলিশের তদন্তে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানা গেছে।

হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।

এর আগে, মঙ্গলবার বিকালে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করে মা ফাহিমা খাতুন (২৮)। তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চারিনাও গ্রামের টমটম চালক সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম ফাহিমার বরাত দিয়ে আদালতকে ফাহিমা জানায়, অভাবের কারণে জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ওলিপুরে প্রাণ কোম্পানিতে চাকরি নেয় তার স্বামী। পরে ২০১৯ সালের শুরুর দিকে পাশের বাড়ির বিত্তশালী আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ফাহিমার। তাদের এই সম্পর্ককে পরিণয়ে রূপ দিতে তিন শিশু সন্তানকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর আক্তার ও ফাহিমা মিলে তাদের হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর আক্তার বিষ কিনে ফাহিমাকে দেয়। পরের দিন ১৮ অক্টোবর দুপুরে ফাহিমা জুসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিন শিশু সন্তানকে খাইয়ে দেয়। বিষক্রিয়া তারা ছটফট করতে থাকলে ওই দিন সন্ধ্যায় তাদের হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিলে ছোট সন্তান সাথী আক্তার (৬) মারা যায়। অপর দুই শিশু সন্তান তোফাজ্জল ইসলাম (১০) ও রবিউল ইসলামকে (৭) দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সৌভাগ্যক্রমে তারা বেঁচে যায়। এরপর সবাই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে থাকে।

ঘটনার কিছু দিন পর আক্তার হোসেন ও ফাহিমার প্রেমের সম্পর্কটি এলাকায় প্রকাশ হতে থাকে। এতে ফাহিমার স্বামীর সন্দেহ বাড়তে থাকে। এরপর স্বামী সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে বিষপানের মূল রহস্য উদঘাটন করেন। গত ২৯ নভেম্বর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফাহিমাকে গ্রেফতার করে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে সব স্বীকার করে এবং ১ ডিসেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।