সবজির দাম কমলেও বেড়েছে আলুর দাম




আলু৩নীলফামারীতে বাধা কপি, ফুল কপি, মুলা, ধনে পাতা, লাউ, পোটল ও বেগুনের মতো বিভিন্ন সবজির দাম কমলেও বেড়েছে আলুর দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। নীলফামারী কিচেন মার্কেটে পাইকারি বাজারে আলু ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে খুচরা বাজারের প্রকারভেদে ওই আলু বিক্রি হয় ৫৫-৬০ টাকায়।

বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী রশিদুল ইসলাম বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে আলু বিক্রি হয়েছিল ৪৫ টাকা কেজি দরে। সেখানে আজ প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১২-১৫ টাকা। তবে বাধা কপি, ফুল কপি, মুলা, ধনে পাতা, লাউ ও বেগুন পানির দামে বিক্রি হচ্ছে।

ওই বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে দ্ধিগুণ। পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে আলু প্রতিকেজি ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আবার খুচরা দোকানে বিক্রি হয়েছে একই আলু ৫৫-৬০ টাকায়।

বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী জাহেনুর রহমান বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আড়তে প্রতি মণ আলুর দাম ১ হাজার ৮০০ টাকা। শনিবার তা বেড়ে প্রতিমণ ১ হাজার ৯২০-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

আলু৩তিনি আরও বলেন, গৃহস্থালি পর্যায় আলু বীজ হিসেবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও কোল্ডস্টোরেজ একেবারে খালি। তাই আলুর বাজার অস্থিতিশীল। কৃষক পর্যায়ে আগাম আলুর উৎপাদন কমে যাওয়ায় (নতুন) বাজারে আলুর সরবারহ কম। তাই গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছ ১২-১৫ টাকা।

বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী গজেন চন্দ্র রায় বলেন, আলু গজানোর সময় আকাশের বৃষ্টির কারনে আলুর বীজ পচে যায়। তাই বিঘা প্রতি আলুর ফলন কমেছে। যেখানে এক বিঘায় আলু উৎপাদন হয় এক থেকে দেড়টন, সেখানে আলু উঠছে আধা টন থেকে একটন। এই কারণে আলুর বাজার অস্থিতিশীল। পাশাপাশি পুরাতন আলুও বাজারে নেই। তাই আলুর দাম বেড়েছে।

নীলফামারী সদরের পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের দিঘলটারী গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মফিজার রহমান বলেন, বাড়ির খাবারের জন্য চাল কিনতে এসে কাঁচা বাজারও করলাম। কাঁচা বাজারের আলুর দাম দেখে অবাক হয়েছি। তিনি বলেন, ২৮ জাতের চালের কেজি ৪৮ টাকা আর দেশি নতুন আলু (পাক্রি/সাইটা) কিনলাম ৬০ টাকায়। বাজারে চাল আর আলুর, দুটার দামই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। পৌষের কনকনে শীতে অনেকে হাত গুটিয়ে বসে থাকায় আয়ও কমেছে। কাঁচা বাজারের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ পড়েছেন বেকায়দায়।

আলু২এদিকে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে শীতের সবজির সরবারহ বাড়ায় দামও কমেছে প্রচুর। ৬০ টাকার বরবটি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা, ঝিঙ্গা কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। ৬০ টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। মুলা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকা। করলা প্রতিকেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১২-১৫ টাকা। পাতা কপি ৬-৮ টাকা ও ফুল কপি ১০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। ধনে পাতা ১৫ টাকা ও লেবু প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকায়। শশার কেজি ১৫ টাকা ও ৬০ টাকার সিম এখন ১০-১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতি পিস ১০, কাঁচকলা প্রতি হালি ১৬, পেঁপে কেজিতে ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা ও আদার (নতুন) কেজি ৯০ টাকা।

জেলা প্রশাসনের মাকেটিং কর্মকর্তা এরশাদ আলম খান বলেন, নতুন আলু চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবারহ কম হওয়ায় আলুর দাম বেড়েছে। আলু রোপনের পর আকাশের বারবার বৃষ্টির কারণে উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়। এখন গ্রামে গঞ্জে নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। কিছুদিনের মধ্যে পর্যাপ্ত নতুন আলু বাজারে উঠলে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।