বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, নাজমুলকে ভয়াবহ নির্যাতন করে হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে হত্যা মামলা না করে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার দায়ের করা হয়েছে। নিহতের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন থাকা হাতের নখ প্লাইয়ার্স দিয়ে তুলে ফেলা, হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। তারা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হাসান ও তার স্ত্রী সাথী বেগমের ফাঁসি দাবি করেছেন।
নিহত নাজমুলের স্ত্রী শ্যামলী বেগম জানান, তার স্বামীকে নির্দয়ভাবে অকথ্য নির্যাতন করে হত্যা করেছে পুলিশ সদস্য হাসান ও তার স্ত্রী সাথী। তিনি তাদের ফাঁসি দাবি করেন। তাজহাট থানা পুলিশ তাকে থানায় ডেকে নিয়ে কাগজে সই নিয়েছে। সেখানে হত্যা মামলা না করে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছে এ বিষয়টি তাকে পুলিশ জানায়নি।
অন্যদিকে প্রত্যক্ষদর্শী মর্জিনা বেগম ও আলেয়া বেগম বলেন, ‘নাজমুলকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার দৃশ্য আমরা দেখেছি। তার হাতের আঙুলে হাতুড় দিয়ে আঘাত করে হাতগুলো থেতলে দেওয়া হয়েছে। প্লায়ার্স দিয়ে হাতের আঙুলের বেশ কয়েকটি নখ তুলে ফেলা হয়েছে। সারারাত ধরে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। পরের দিন শুনলাম, সে নাকি আত্মহত্যা করেছে। এটা সাজানো নাটক ছাড়া আর কী হতে পারে?’
এদিকে বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার আলতাফ হোসেন বলেছিলেন, তিনি দেখেছেন, নাজমুল যে ঘরে আত্মহত্যা করেছে সেই ঘরটি ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। ফলে এটা নিঃসন্দেহে আত্মহত্যা। তার পরেও এ ঘটনার জন্য দায়ী পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতারুজ্জমানের বলেন, ‘হত্যা মামলা হয়নি। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩২৩/৩৪২/৩০৬ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
এদিকে, দুপুর সাড়ে ১২টায় কঠোর পুলিশি পাহারায় পুলিশ কনস্টেবল হাসান ও তার স্ত্রী সাথীকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনার পর তাদের সরাসরি হাজতখানায় নেওয়া হয়। পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক জানান, আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও খবর: অটোচালককে হত্যার অভিযোগ, সস্ত্রীক পুলিশ কনস্টেবল গ্রেফতার