শিশুকে হত্যার ৪০ দিন পর ফোনে লাশের সন্ধান দিলো অপহরণকারী

বগুড়ার গাবতলীতে মুক্তিপণ না পেয়ে প্রবাসীর সাত বছরের শিশুসন্তান হানজালাকে হত্যা করেছে অপহরণকারীরা। উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের নিশুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৪০ দিন পর অপহরণকারীরা বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ফোনে লাশের সন্ধান দেয়। পরে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে পচন ধরা লাশ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, অপহৃত শিশুকে উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা পায়নি শিশুটির পরিবার। গাবতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান রাজু জানান, শুক্রবার শিশুটির বাবা এ ঘটনায় গাবতলী থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

শিশু হানজালা গাবতলী উপজেলার নিশুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও মালয়েশিয়া প্রবাসী পিন্টু মিয়ার ছেলে। সে নিশুপাড়া বটতলা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে পড়তো। শিশুটির হত্যাকাণ্ডে স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা অবিলম্বে ঘাতকদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের মেম্বর মানিক মিয়া ও স্বজনরা জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার দিকে শিশু হানজালা বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ওইদিনই গাবতলী থানায় জিডি করা হয়। ছেলেকে অপহরণের খবর পেয়ে পিন্টু মিয়া দু’দিন পর বাড়িতে ফেরেন। অপহরণকারীরা ফোনে মা তাসলিমা বেগমকে অপহরণের কথা জানায়। মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না পেলে ছেলেকে হত্যা করা হবে বলে জানায় তারা। শিশুটির বাবা-মা ফোন নম্বর নিয়ে গাবতলী থানায় গেলেও তারা সন্তান উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা পাননি। ৪০ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে অপহরণকারীরা শিশুর মাকে মোবাইল ফোনে জানায়, টাকা না দেওয়ায় তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। ছেলের লাশ পলিথিনে মুড়িয়ে ইটবেঁধে বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবিয়ে রাখার কথা জানায় তারা। তাদের তথ্যমতে রাতেই ওই পুকুর থেকে হানজালার লাশ উদ্ধার করা হয়। গাবতলী থানার পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়। পিন্টু মিয়া বিদেশে থাকায় এর আগেও দুর্বৃত্তরা তার স্ত্রীকে ফোন করে দুই লাখ টাকা ধার চেয়েছিল।

গাবতলী থানার ওসি নুরুজ্জামান রাজু জানান, শিশুর বাবা শুক্রবার অপহরণ ও হত্যা মামলা করেছেন। শিশুটিকে উদ্ধারের অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। প্রথমে অপহরণকারী জিআরপি পুলিশের এসআই ফারুক সেজে ফোন দিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। তদন্ত করে জানা যায়, জিআরপি পুলিশে ওই নামে কোনও কর্মকর্তা নেই। এরপর থেকে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অপহরণকারী ফোনে হত্যার কথা জানায় ও লাশের সন্ধান দেয়।

শিগগিরই ঘাতককে শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হবে বলে জানান ওসি।