কাজ ঝুলিয়ে রাখা ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি মন্ত্রীর

যেসব ঠিকাদার বছরের পর বছর কাজ ঝুলিয়ে রেখেছে, কাজের মান খারাপ করেছে তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা ঝুলিয়ে রাখা কাজ শেষ না করে নতুন কাজ সম্পাদন করছে, সেরকম ঠিকাদার ও কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যারা সঠিকভাবে কাজ সম্পাদন করছেন তাদের কাজ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে করে তারা উৎসাহিত এবং প্রশংসিত হন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে গাজীপুর মহানগরের রাজেন্দ্রপুর গজারিয়াপাড়া এলাকায় প্রধান অতিথি হিসেবে নির্মাণ দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তিনি। এসময় মন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

মন্ত্রী জানান, ভবিষ্যতে যেসব ঠিকাদার কাজের গুণগত মান খারাপ করবেন তাদেরও কালো তালিকাভুক্ত করে সব ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিছু ব্যর্থতা ও দুর্বলতার কারণে অতীতে অনিয়ম করা অনেক ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটি কাটিয়ে ওঠার জন্য তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একযোগে কাজ করছেন।

মন্ত্রী বলেন, টেকসই নির্মাণ কাজ করার জন্য প্রশিক্ষিত শ্রমিক ও প্রকৌশলী প্রয়োজন। শ্রমিকদের প্রাতিষ্ঠানিক কোনও প্রশিক্ষণ থাকে না। সেজন্য গুণগত মাণ নিয়ন্ত্রণ এবং কাজের পরিমাণ বেশি করা তাদের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হয়ে উঠে না। এ বিষয়টিকে চিহ্নিত করে গাজীপুরে প্রশিক্ষণ ইউনিট কেন্দ্র করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এখানে সাধারণ লোকজনকে রাজমিস্ত্রি ও রড মিস্ত্রিসহ কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য মিস্ত্রি হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তাদেরকে সনদ দেওয়া হবে। এতে তারা চাকরি ও কাজের সুযোগ পাবে, তাদের কাজের মানও ভালো হবে। তেমনি তারা বিদেশেও কর্মসংস্থানের সুযোগে পাবে।

তিনি বলেন, এলজিইডি সারা বাংলাদেশে কম ব্যয়ে অধিক কাজ করার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। কম খরচে ব্রিজ ও রাস্তা করা হয়েছে। এক সময়ে আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। আমি মন্ত্রী হওয়ার পরে এ বিষয়টি চিহ্নিত করেছি। টেকসই রাস্তা করার জন্য এখন আমরা এস্টিমেট ও ডিজাইনগুলোর পরিবর্তন করেছি। এস্টিমেট ও ডিজাইন পরিবর্তন করে এখন থেকে গুণগতমান সম্পন্ন কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। যেহেতু এস্টিমেট বেশি, তাই টেকসইভাবে কাজ করার জন্য সব প্রকৌশলীও এখন থেকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন।

মন্ত্রী গাজীপুর মহানগর এলাকায় একসঙ্গে অনেকগুলো রাস্তার নির্মাণ কাজ চলতে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলে ও পরামর্শ নিয়ে এবং তাদের সহযোগিতায় রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ মুগ্ধ করেছে। দায়িত্ব পালনে এধরনের জনপ্রতিনিধির আন্তরিকতা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এজন্য মহানগর কর্তৃপক্ষকে তিনি ধন্যবাদ জানান। মন্ত্রী গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সড়ক, ড্রেন নির্মাণসহ নানা উন্নয়ণকাজ ঘুরে দেখেন।

এসময় মন্ত্রীর  সঙ্গে ছিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মেজবাহ উদ্দিন, গাজীপুর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বাকের, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার জাকির হাসানসহ বিভিন্ন অধিদফতরের কর্মকর্তারা।