ভাসানচরে পৌঁছেছেন আরও ১০০৯ জন রোহিঙ্গা

চতুর্থ ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও এক হাজার ৯ জন রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছেছেন। আজ মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজে করে তাদের ভাসানচরে আনা হয়। এ নিয়ে ভাসানচরে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ালো।রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর

এর আগে, সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নৌবাহিনীর রেডি রেসপন্স বার্থ থেকে তিনটি জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হয়। সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সড়ক পথে তারা কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছান। রাতে তাদের বিএএফ শাহীন কলেজ মাঠে অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখা হয়।

ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহে আলম বলেন, এক হাজার ৯ জন রোহিঙ্গাকে জাহাজ থেকে নামিয়ে প্রাথমিক মেডিক্যাল পরীক্ষা শেষে গাড়িতে করে ওয়্যার হাউজে সমবেত করে ভাসানচরে বসবাসের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন সম্পর্কে ব্রিফ করা হয়। পরে তাদের ভাসানচরের ক্লাস্টারে স্থানান্তর করা হয়। এ সময় ঘাটে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর

এর আগে গতকাল সোমবার দুপুর ২টায় চতুর্থ দফার প্রথম ধাপে দুই হাজার ১০ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে এসে পৌঁছান। তাদের মধ্যে ৫৭৭ জন পুরুষ, ৪৮৫ জন নারী ও ৯৪৮ জন শিশু ছিল।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে আনুষ্ঠানিকভাবে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে পৌঁছান এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গাদের জন্য প্রস্তুত ৭, ৮, ৯ ও ১০ নম্বর ক্লাস্টারে তাদের রাখা হয়। প্রথম ধাপে ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে পুরুষ ৩৬৮ জন, নারী ৪৬৪ জন ও শিশু ৮১০ জন।রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর

গত ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় কক্সবাজার থেকে আরও এক হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছান।

গত ২৯ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপের প্রথম পর্যায়ে পৌঁছায় এক হাজার ৭৭৬ জন রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে পুরুষ  ৪০৪ জন, মহিলা ৫১০ জন ও ৮৬২ জন শিশু ছিল। পরের দিন ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১ হাজার ৪৬৭ জন রোহিঙ্গা এসে পৌঁছায়। এদের মধ্যে পুরুষ ৩৪৭ জন, মহিলা ৪০৫ জন ও ৭১৫ জন শিশু ছিল।রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর

গত বছর বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় ভাসতে থাকা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়। উদ্ধার করা দলটিতে ৯২ জন পুরুষ, ১৫৭ জন নারী ও ২৮ জন শিশু ছিল। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আবাসন

এর আগে, ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল হাতিয়ায় মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ শেষ হয়। ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও আগেই শেষ হয় সব অবকাঠামো নির্মাণ। হাতিয়া থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ১৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার দ্বীপের এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১২০টি গুচ্ছগ্রাম রয়েছে। এতে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-

রোহিঙ্গাদের জন্য কক্সবাজারের চেয়ে ভাসানচর ভালো যে কারণে

ভাসানচরে কেমন আছেন রোহিঙ্গারা

ভাসানচরের সুপার শপে প্রতিদিন বিক্রি ৫০ হাজার টাকা