ধর্ষণ মামলায় অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন!

ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে সাজানো ধর্ষণ মামলায় নিজেই কারাগারে আছেন ছগির(৩৮) নামের এক আইনজীবী সহকারী (মহরার)। শুক্রবার (২৭ মার্চ) সকালে ছগিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ আদালতে হাজির করলের ওইদিনই আদালতের বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বরগুনা সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের গুদিঘাটা গ্রামের আকলিমা (৪০) নামের এক নারী ২৫ মার্চ বৃহস্পতিবার বরগুনা সদর হাসপাতালের জাহিদ নামের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন বরগুনা সদর থানায়। এরপর বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই কেয়া ও ওই নারীসহ পুলিশরে একটি টিম কথিত ধর্ষকের কর্মস্থলে গিয়ে তাকে চিহ্নিত করতে বললে ওই নারী চিনতে পারেনি। এ ঘটনায় পুলিশের সন্দেহ হলে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই নারী বলেন, মামলা সূত্রে ছগির নামের এক মহরীরের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ছগির নিজেই তাকে ধর্ষণ করে ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বলে। এরপর বরগুনার সরকারি হাসপাতালের জাহিদ নামের এক কর্মচারীকে ফাঁসাতে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ করতে থানায় পাঠায় ছগির। সে কখনও জাহিদকে কখনও দেখেননি বলেও স্বীকার করে।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালে কর্মরত জাহিদ বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাদের কোনও পারিবারিক শত্রুতা নেই। তবে আমার স্ত্রীর বোনের সঙ্গে তার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী স্বামী জহিরুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে সম্প্রতি ডিভোর্স হয়ে গেলে তারা আমার শালিসহ আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। আমার মনে হয় জহিরুল ইসলাম বাবুর ইন্ধনেই ছগির আমাকে ফাঁসাতে এই মামলা দিতে চেয়েছিল। আমি এঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।’

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশি তদন্তে মিথ্যে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ওই নারী তার ভুল বুঝতে পেরে সত্যতা স্বীকার করেছে। নারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা প্রাথমিকভাবে ওই মহরার ছগিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে কাউকে ফাঁসানোর কোনও সুযোগ নেই। বরগুনা সদর থানার পুলিশ সব অভিযোগ শতভাগ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন। পুলিশ ওই নারীর মুখের বয়ান অনুযায়ী ছগিরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। সেই সঙ্গে ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।