করোনার টিকা আছে ৬০ হাজার, চাহিদা কয়েক লাখ 

রংপুরসহ বিভাগের ৮ জেলায় করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ১০ দিনে ৬ জন মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি একেবারে মানা হচ্ছে না। মাস্ক না পরায় সংক্রমণের হার বাড়ছে। এরই মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিয়েছে। রংপুর বিভাগে মাত্র ৬০  হাজার ডোজ টিকা রয়েছে। যা সর্বোচ্চ ৫/৭ দিন চলতে পারে বলে খোদ স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। সেইসঙ্গে নতুন করে ভ্যাকসিন আসার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন দেওয়ার ঘোষণা করা হলেও নতুন করে ভ্যাকসিন বরাদ্দ দেওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। 

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সোয়া কোটি জনসংখ্যার রংপুর বিভাগের ৮ জেলার জন্য করোনার প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ৬ লাখ। রবিবার (২৮ মার্চ) পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ১৯ জনকে। এর মধ্যে রংপুর জেলায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৩২ জন, দিনাজপুর জেলায় ৯৭ হাজার ৮০০ জন, নীলফামারীতে ৬৯ হাজার ৩৪০ জন, গাইবান্ধায় ৫৬ হাজার ২৯৬ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৪৫ হাজার ৯০৫ জন, কুড়িগ্রামে ৪২ হাজার ৩৯৪ জন, পঞ্চগড়ে ৩৭ হাজার ৯৮২ জন এবং লালমনিরহাটে ৩৩ হাজার ৮৫৪ জনকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।

মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনার ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিয়েছে। নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া না হলে হাজার হাজার মানুষ ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত হবে।

রংপুর বিভাগে করোনায় আক্রান্ত্রের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ জনে। এর মধ্যে দিনাজপুরে ১৪ জন, গাইবান্ধায় ২ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ জন, রংপুরে ২ জন এবং নীলফামারীতে ৮ জন। গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছে দেড়শর বেশি মানুষ। এ নিয়ে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ হাজার ১৮৫ জন। এর মধ্যে রংপুরে ৪ হাজার ১৫৮জন, পঞ্চগড়ে ৮০১ জন, নীলফামারীতে ১ হাজার ৩৮৯ জন, লালমনিরহাটে ৯৭৩ কুড়িগ্রামে ১ হাজার ৩১ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ হাজার ৫৩২ জন, দিনাজপুরে ৪ হাজার ৮১১ জন এবং গাইবান্ধায় ১ হাজার ৪৯০ জন। করোনায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ৩১২ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দিনাজপুরে মারা গেছে ১১১ জন, রংপুরে ৭৩ জন। সবচেয়ে কম গাইবান্ধায় ১৭ জন।

রংপুরের সিভিল সার্জেন ডা. হিরম্ব কুমার জানিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব না মানা মাস্ক পরিধান না করা, স্বাস্থ্ বিধি অবজ্ঞা করায় সংক্রমণ বেড়েছে। এজন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে, রংপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নগরীতে বেশিরভাগ মানুষ মাস্ক পরেন না। মুখে মাস্ক থাকলেও তা দিয়ে মুখ ঢাকে ননা। বড় বড় শপিং মল ও মার্কেটে এখন হাত ধোয়া বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হয় না। একইভাবে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রবেশে হাত ধোয়া বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যাবহার করা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির কোনও তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।

সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করেন আর মাত্র ৬০ হাজার করোনা ভ্যাকসিন আছে। ভ্যাকসিনের চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে।

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া সম্পর্কে বলেন, জনসচেনতা বাড়াতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। এজন্য মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে।