মুন্সীগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় দুই দিন পর মামলা হয়েছে। ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫০০ জনকে আসামি করে এই মামলা করা হয়। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় এ মামলাটি দায়ের করে। সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান এ খবর নিশ্চিত করেন।

জামিয়া ইসলামিয়া হালিমিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মধুপুর পীর মাওলানা আব্দুল হামিদের ছেলে আব্দুল্লাহ (৩৫) ও ওবায়দুল্লাহ কাশেমীকে (৪০) মামলার যথাক্রমে ৯ ও ১০ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তবে মাওলানা আব্দুল হামিদকে আসামি করা হয়নি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৮ মার্চ রাতে অভিযান পরিচালনা করে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক আট জনকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। তবে এই মামলায় এখন পর্যন্ত আর কেউ গ্রেফতার নেই।

ওসি (তদন্ত) জানান, এই আট জনের রিমান্ড আবেদন করা হবে। বর্তমানে তারা আদালতের নির্দেশে জেল হাজতে রয়েছে।

পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, হরতালের দিন যারা সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত ছিল প্রাথমিকভাবে মামলায় তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ বাদ যাবে না।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার হরতালের দিন ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলা এলাকায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হেফাজত নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়। এরপর নিকটস্থ বড়শিকারপুর ও শুলপুর এলাকায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং ফাঁকা গুলি ছোড়ে। হেফাজতের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছোড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর, তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও হেফাজতের কর্মীরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে। সংঘর্ষে জামিয়া ইসলামিয়া হালিমিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মধুপুর পীর মাওলানা আব্দুল হামিদসহ ৪০-৫০ জন আহত হন। গুরুতর আহত হন সিরাজদিখান থানার ওসি। হরতালকারীরা হকিস্টিক দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে।