সরকারি চাল পাচার: খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ও নৈশপ্রহরী গ্রেফতার

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে খাদ্যগুদাম থেকে দুই ট্রাক ১০ টাকা কেজি দরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সরকারি চাল পাচারের ঘটনায় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) বেলাল হোসেন এবং নৈশপ্রহরী আল আমিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় চাল বোঝাই ট্রাক জব্দ হয়। তবে এখনও পাচার হওয়া আরেকটি ট্রাকের ৩৬০ বস্তা চালের সন্ধান পায়নি কর্তৃপক্ষ। ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল ওহাব এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এ ঘটনায় বুধবার (১৪ এপ্রিল) উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুক্তা রানী সাহা বাদী হয়ে ভূঞাপুর থানায় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা, নৈশপ্রহরী ও অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ গ্রেফতার দেখিয়ে দুপুরে আসামিদের আদালতে পাঠান।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভূঞাপুর খাদ্য গুদামের সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে মঙ্গলবার দুপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরের চাল ট্রাকযোগে পার্শ্ববর্তী ঘাটাইলের হামিদপুরের একটি রাইস মিলে বিক্রির জন্য যায়। পরে পুনরায় বিকালে আরেকটি ট্রাকে চালবোঝাই করে। এ ট্রাকে ১৪ মেট্টিক টন চাল ছিল। তবে ওই চাল উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের ডিলার নজরুল, ফরহাদ ও দিলীপ, অর্জুনা ইউনিয়নের ডিলার সাখায়াত হোসেন লেবুর চাল বলে দাবি করের খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা বেলাল হোসেন। এ বিষয়ে বেলাল হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ডিলারদের রেখে যাওয়া চাল বলে লিখিত দেন। তিনি রাতভর নাটক সাজানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তার বিরুদ্ধে চাল পাচারের বিষয়টি উঠে আসে।

ভূঞাপুর খাদ্যগুদামের নৈশপ্রহরী আল আমিন তার লিখিত জবাবে জানায়, ‘ওসিএলএসডি কর্মকর্তা স্যারের মৌখিক নির্দেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল প্রথমে একটি ট্রাকে ভর্তি হয়ে চলে গেছে। পরে আবার আরেকটি ট্রাকে চাল ভর্তি করা হয়।’

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মুক্তা রানী সাহা বলেন, ‘জব্দ হওয়া ওই চালগুলো মার্চ মাসে খুলনা থেকে ভূঞাপুর গুদামে এসেছে। তবে চালগুলোর বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশনা আসেনি বরাদ্দের জন্য। এর মধ্যেই তিনি (খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা) কীভাবে পাচার করছেন সেটা জানা নেই। এ বিষয়ে দুই জনের নামসহ অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’

ভূঞাপুর থানার ওসি বলেন, ‘খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি দুদক সংশ্লিষ্ট হওয়ায় জেলা দুদক সমন্বয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান বলেন, ‘পাচার হওয়া আরেক ট্রাক চালেন  হদিস পাওয়া যায়নি। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’