ফের রিমান্ডে রফিকুল ইসলাম মাদানী

রফিকুল ইসলাম মাদানীকে (২৭) আবারও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপির) বাসন থানায় নেওয়া হয়েছে। এর আগে জিএমপির গাছা থানার অপর একটি মামলায় গত রবিবার দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারগার-২-এর জেলার আবু সায়েম জানান, ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে একটি মামলায় দুই দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানায় নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে তাকে পুলিশের পাহারায় এ কারাগার থেকে বাসন থানায় নেওয়া হয়। গত ১১ এপ্রিল বাসন থানায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়। এর আগে জিএমপির গাছা থানায় গত ৮ এপ্রিল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের অপর একটি মামলায় গত রবিবার দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।

জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ফারুক জানান, গত ১১ এপ্রিল গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টেকনগর পাড়া এলাকার কফিল উদ্দিনের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক ব্যক্তি রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে বাসন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে গত ১৮ এপ্রিল আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. সাখাওয়াত হোসেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুন নাহার রিমান্ড শুনানির ধার্য তারিখ বুধবার (২১ এপ্রিল) ভার্চুয়ালি শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক। এর পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে কারাগার থেকে থানায় আনা হয়েছে।

ওসি আরও জানান, বাদী মামলায় মাদানীর বিরুদ্ধে ওয়াজ মাহফিলের নামে ধর্মীয় বক্তব্যের আড়ালে রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য প্রদান করে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অভিযোগ করেন। এতে তার বিরুদ্ধে মারাত্মক মিথ্যা, ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করার মতো অপরাধে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে। রফিকুল ইসলাম মাদানী অপর ব্যক্তিদের সহায়তার সরাসরি সশস্ত্র জিহাদের ডাক দেন এবং এক্ষুনি জিহাদের উপযুক্ত সময় বলে সবাইকে জিহাদে অংশ গ্রহণের আহ্বান জানান। সংবিধান পরিপন্থী, রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল এ ধরনের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানির ভিডিওচিত্র ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হয়। তার ওই বক্তব্যে সশস্ত্র জিহাদের আহ্বান রয়েছে বলে বাসন থানার মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালতের সহকারী কমিশনার শুভাশীষ ধর আরও জানান, গত ৭ এপ্রিল ভোররাতে ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে (২৬) নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার লেটিরকান্দা এলাকার বাড়ি থেকে আটক করে র‌্যাব। তিনি ওই এলাকার মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে। ওই দিন রাতেই গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়। ৮ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন র‌্যাব-১-এর নায়েব সুবেদার (ডিএডি) আব্দুল খালেক। এরপর গত ১১ এপ্রিল বাসন থানায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়।