ত্রিপল ঢাকা ট্রাকে মানুষ আসছে রংপুর অঞ্চলে

বড় বড় ট্রাকের ওপর ত্রিপল দিয়ে ঢেকে মালামালের মতো অসংখ্য মানুষ আসছে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর নগরীর মেডিক্যাল মোড় এলাকায় ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছে ওভারব্রিজে দাঁড়িয়ে দেখা গেছে একটার পর একটা ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ট্রাক আসছে রাজধানী থেকে। তারা সবাই ঢাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। বাইরে থেকে মনে হচ্ছে সেগুলো মালবোঝাই ট্রাক। এসব ট্রাকের মধ্যে ঠাসাঠাসি করে আসছে হাজার হাজার মানুষ। ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ট্রাকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে তাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিন এ প্রতিনিধিসহ কয়েকজন সাংবাদিক দুটি ট্রাকের পিছু নেন। কিছু দূর যাওয়ার পর সিও বাজার পার হয়ে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে পেট্রোল পাম্পের কাছে ওই দুটি ট্রাক থামালে দেখা যায় ভয়াবহ দৃশ্য। ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ট্রাকের ভেতরে ৫০ থেকে ৭০ মানুষ। গাদাগাদি করে বসে তারা আসছেন ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে। জিজ্ঞাসা করে জানা গেছে, ট্রাকের ভেতরে বসে আসা মানুষরা যাচ্ছেন রংপুরের তারাগঞ্জ, নীলফামারীর জলঢাকা সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন এলাকায়। তারা জানালেন, ৫শ’ টাকা ভাড়া দিয়ে তারা ঢাকা থেকে এভাবেই সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে এসেছেন। মানিক নামে এক যুবক জানালেন, ঢাকার সাভারের কাছ থেকে তারা ট্রাকে উঠেছেন। তারা ওঠার পর পুরো ট্রাকের ওপর ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রশি দিয়ে বেঁধে দিয়েছে ড্রাইভার আর হেলপার, যাতে বোঝা না যায় মানুষ না মালামাল যাচ্ছে। মানিক সৈয়দপুরের কাছে তার বাড়িতে যাবেন। দীর্ঘপথে অনেক কষ্ট লাগলেও বাড়ির কাছাকাছি আসার পর স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে পারবেন সেজন্য তার ভালো লাগছে বলে জানালেন। একই কথা জানালেন নীলফামারীর জলঢাকার যাত্রী মোসলেম উদ্দিন। তিনি জানান, ৫শ’ টাকা আগাম ভাড়া দিয়ে ট্রাকে এভাবেই রংপুর পর্যন্ত আসতে পেরেছি। পথিমধ্যে দু-চার জায়গায় পুলিশ গাড়ি থামালেও ড্রাইভার হেলপার তাদের ম্যানেজ করে ফেলায় কোনও সমস্যা হয়নি। ট্রাকের ড্রাইভার আসলাম হোসেন বলেন, ‘৭০ জন মানুষ নিয়েছি। ৩৫ হাজার টাকা আয় হয়েছে।’ পথিমধ্যে ৪-৫ হাজার টাকা ব্যয় হলেও ভালোই লাভ হবে বলে আশা তার।

ট্রাকের ভেতরে থাকা অনেক যাত্রীকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা গেছে। তারা জানালেন, হাজার হাজার নারী-পুরুষ ট্রাকে করে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন। বিশেষ করে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

সার্বিক বিষয়ে জানার জন্য রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।