ফেসবুকের কল্যাণে ২০ বছর পর স্বজনদের কাছে

গত ২০ বছর আগে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিকে ফিরে পেয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাবো এলাকায় এক পরিবারের সদস্যরা ভীষণ আনন্দিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় নিখোঁজ ওই ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়। ফিরে পাওয়া ব্যক্তি দুলাল মিয়া (৪২) শ্রীপুর পৌরসভার উজিলাবো এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে।

দুলাল মিয়ার বড় ভাই আবুল হোসেন জানান, প্রায় ২০ বছর পর ভাইকে ফিরে পেয়ে এখন তারা অনেক খুশি। ইতোমধ্যে যদিও সে পরিবারের কিছু সদস্যকে হারিয়েছে, তারপরও তাকে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ভীষণ খুশি। নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে অবশেষে কোনও দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে ভেবেছিলেন তারা।

তিনি বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর আগে শ্রীপুর বাজারে একটি খাবার হোটেলে কাজ করতেন দুলাল মিয়া। সে কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। হঠাৎ কোনও এক দুপুরের পর থেকে সে নিখোঁজ হয়। বছর তিনেক পর্যন্ত বিভিন্ন উপায়ে তাকে বহু খোঁজাখুঁজি করা হয়। থানায় সাধারণ ডায়েরি করে বিভিন্ন মাধ্যমে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়।’

দুলাল মিয়াকে দেখতে শত শত মানুষ জড়ো হয়তিনি জানান, দুলাল নিখোঁজের সময় তাদের বাবা ছিলেন না। তবে মা বেঁচে ছিলেন। তাদের মা মারা যান ২০১৬ সালে। দুই ভাই এবং এক বোনের মধ্যে সে ছোট।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী ও দুলালের আত্মীয় মো. আমীরুজ্জামান বলেন, ‘এসএসসি ব্যাচ-৯২-এর এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডিতে দুলালের বিষয়ে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। পরে সাদিকুল নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে ওই আইডির সূত্র ধরে দুলালের সব খবরা-খবর নেওয়া হয়। রবিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সূর্যকান্দি গ্রাম থেকে দুলালকে চিহ্নিত করা হয়। এ সময় ওই এলাকার শত শত মানুষ জড়ো হয়। সহযোগিতা হিসেবে অনেকের কাছ থেকে পাওয়া অর্থকড়ি সে এলাকার গৃহিণীদের কাছে জমা করে রাখতো। আমরা দুলালকে চিহ্নিত করে নিয়ে আসার সময় ওইসব নারী তাদের কাছে রাখা দুলালের ১৫ হাজারের বেশি টাকা ফেরত দিয়ে যায়।’

সরাইলের সূর্যকান্দি এলাকার ইউপি সদস্য ফজলুল হক জানান, দুলাল প্রায় ২০ বছর আগে থেকে সরাইলের বিভিন্ন এলাকায় ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াতেন। কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তিনি অনেকের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে দিনাতিপাত করতেন। এ এলাকার যেখানে ইচ্ছা সেখানেই তিনি রাতযাপন করতেন।