পানির মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার একটি সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সবগুলো ঘরের চারপাশে বর্ষার পানি উঠেছে। ঘরগুলোতে এখনও কোনও উপকার ভোগী বসবাস শুরু করেননি। বর্তমানে সেখানে বসবাস করার মতো অবস্থা নেই। সেখানে কৃষকদের পাট জাগ দিতেও দেখা গেছে। ঘরগুলো বিভিন্ন পোকামাকড়ের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সূর্যক চরপাড়া গ্রাম এলাকায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় ১৬টি ঘরের সবগুলোর চারপাশে পানি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এমন নিচু জায়গাতে ঘর করা নিয়ে শুরু থেকেই স্থানীয় লোকজন জনপ্রতিনিধিরা আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু তাদের কথার গুরুত্ব দূরে থাক কর্ণপাতও করা হয়নি। কোনও কিছু আমলে না নিয়ে তৎকালীন ইউএনও সেখানে ঘর নির্মাণ করেন বলে অভিযোগ করেন ওই এলাকাবাসী। এছাড়াও ঘর তৈরিতে নিম্নমানের ইট, বালি-রড, কাঠ ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে বলেও তাদের অভিযোগ।

IMG_20210815_114256রুপাপাত ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজমুল হোসেন বলেন, ‘এখানে যখন কাজ শুরু করা হয় তখন একবার গিয়েছিলাম। এলাকাবাসীসহ আমি এ জায়গা সম্পর্কে বলেছিলাম, কোনও কাজ হয়নি। তারপর আর ওখানে যাইনি। এখন হাঁটু সমান পানিতে ভাসছে। পানি আরও বেড়ে কোমর সমান বা তার উপরে উঠতে পারে। গতবার কোমর সমান পানি হয়েছিল।’

এ বিষয়ে রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজার রহমান মোল্লা বলেন, ‘আমি ওখানে কাজের শুরুতে একবার গিয়েছিলাম। আর যাইনি। শুনেছি ঘরের চারপাশে পানিতে ঢুবে গেছে। জায়গাটা নিচু এলাকা। বেশি করে মাটি অথবা বালু দিয়ে উঁচু করে কাজ করলে এ সমস্যা হতো না। আমরা তো আর কাজ করিনি। আগের ইউএনও সাহেব করেছেন। বর্তমানে ঘরগুলোতে লোকজন ওঠেননি। এ নিয়ে শুরুতে প্রতিবাদ হলেও ইউএনও সাহেব তার ক্ষমতাবলে তুলনামূলক নিচু জায়গাতেই ঘর নির্মাণ করে যান।’

IMG_20210815_114230বোয়ালমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারিয়া হক ফোনে জানান, ওই জায়গায় যখন কাজ করা হয় তখন ছিল শুকনো মৌসুম। এলাকাবাসীর অভিযোগও সঠিক নয়। তারা ঠিক বলেনি। আসলে জায়গাটা নিচু এলাকা। ওই জায়গায় ঘর নির্মাণের আগে অনেক বালু ফেলা হয়েছে। বালু দিয়ে উঁচু করে তারপর ঘর নির্মাণ করা হয়। তারপরও যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তার সমাধান করা হবে। মঙ্গলবার থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা (সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) মো. হাসিব সরকার ফোনে বলেন, ‘ওখানেউপকার ভোগীরা থাকলে তাদের সঙ্গে কথা বলে অথবা সরেজমিনে দেখে চেষ্টা করা হবে জলাবদ্ধতা নিরসনের।’

এ প্রসঙ্গে জানতে তৎকালীন ইউএনও ঝোটন চন্দ্রকে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।