মুহিবুল্লাহর পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক দূত

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ডরুজ।

শুক্রবার দুপুরে উখিয়ার ট্রানজিট পয়েন্টে তাদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। শোনেন ওই রাতের লোমহর্ষক বিবরণ। এ ছাড়া উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির এবং নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম কোনারপাড়ার নো মেনস ল্যান্ড শিবিরও পরিদর্শন করেন টম অ্যান্ডরুজ।

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরেজমিনে জানতে সোমবার বাংলাদেশে পৌঁছান তিনি। এক সপ্তাহের সফরে বাংলাদেশে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক ছাড়াও কক্সবাজার ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন বলে জানানো হয়েছে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গাদের শীর্ষস্থানীয় নেতা মুহিবুল্লাহকে হত্যার একমাস তার পরিবারসহ স্বজনদের ক্যাম্প থেকে অন্যত্র সরিয়ে উখিয়ার ট্রানজিট পয়েন্টে রাখা হয়।

এ বিষয়ে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) নেতা ও মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিব উল্লাহ জানান, ‘শুক্রবার দুপুরে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ডরুজসহ একটি দল এখানে আসেন। ভাবি (মুহিবুল্লাহ স্ত্রী) ও তার সন্তানদের খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি সেদিন মুহিবুল্লাহকে কীভাবে হত্যা করা হয় সেই বর্ণনা শোনেন। পাশাপাশি তারা কেমন জীবন যাপন করছেন, সেটাও শোনেন।’

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) প্রতিনিধি ও কুতুপালং নিবন্ধিত ক্যাম্প-ইনচার্জ (উপ সচিব) রাশেদুল ইসলাম জানান, ‘মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ডরুজ ক্যাম্প পরিদর্শন করছেন।’

আরআরআরসি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে প্রতিনিধি দল উখিয়ার ৩ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের সিআইসির কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় প্রতিনিধি দলের প্রধান রোহিঙ্গাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। প্রত্যাবাসন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্প-১ ইস্ট-এর একটি লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন টম অ্যান্ড্ররুজ। সেখানে রোহিঙ্গা শিশু ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে সেখান থেকে ১৭ নম্বর ক্যাম্পে যান ও উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্টে মুহিবুল্লাহর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বেলা আড়াইটার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম নো মেনস ল্যান্ডের রোহিঙ্গা শিবিরে যান তিনি। সেখানে দূর থেকে ক্যাম্প পরিদর্শন করে চলে আসেন। রবিবার আরআরআরসি এবং এপিবিএন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে টম অ্যান্ডরুজের।

এর আগে ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে মিয়ানমারের বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ইয়াংহি লি। বারবার অনুমতি চেয়েও মিয়ানমারে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বৈঠকও করতে পারেননি। তবে তিনি কয়েক দফা বাংলাদেশ সফর করে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।