সুগন্ধায় ভেসে উঠলো আরও একটি লাশ

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযানের পঞ্চম দিন মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে ৮টার দিকে লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় লাশটি ভেসে ওঠে। এ নিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট ৪২ জনের লাশ পাওয়া গেলো।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, সকাল ৮টায় সুগন্ধা নদীর লঞ্চ টার্মিনাল লাশ ভেসে উঠতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল উদ্ধার করে। লাশটি পুরুষের। বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। তার মুখ ঝলসে গেছে। গায়ে সোয়েটার রয়েছে। এখনও পরিচয় শনাক্ত হয়নি। 

আরও পড়ুন: ‘আগুন লাগার পর দ্রুত লঞ্চ পাড়ে থামালে এত মৃত্যু হতো না’

ঝালকাঠি সদর থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, এর আগে গতকাল সোমবার লঞ্চের ক্যানটিনের বাবুর্চি শাকিল মোল্লার লাশ উদ্ধার করা হয়। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বাসিন্দা তিনি। তার মামা লুৎফর রহমান শনাক্তের পর লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মনির হোসেন নামে নিখোঁজদের এক স্বজন বাদী হয়ে নৌযান আইনে সদর থানায় মামলা করেছেন। মামলায় লঞ্চ মালিক হামজালাল শেখসহ আট জন নামধারী ও অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় হামজালাল শেখকে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

দ্বিতীয় দিনের মতো আজ ঝালকাঠি সিআইডি পুলিশের পক্ষ থেকে শহরের পৌর মিনি পার্ক ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এলাকায় স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: স্বপ্নীলকে খুঁজছেন মা

গত ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় সদরঘাট থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে অভিযান-১০ লঞ্চ। এরপর থামে চাঁদপুর, বরিশাল ও দপদপিয়া ঘাটে। তিন ঘাটেই যাত্রীরা ওঠানামা করেছেন। দপদপিয়া থেকে লঞ্চটি ছাড়ে বেতাগীর উদ্দেশে। এর মাঝেই বাধে বিপত্তি। 

রাত ৩টায় সুগন্ধা নদীতে চলমান লঞ্চের ইঞ্জিন কক্ষে আগুনের সূত্রপাত। পানিতে ভাসমান এই যানে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আগুনের লেলিহান। প্রাণে বাঁচতে যাত্রীরা ঝাঁপ দিতে থাকেন সুগন্ধা নদীতে। এতে অনেকে প্রাণে বাঁচলেও এখন পর্যন্ত ৪২টি লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শতাধিক। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। উদ্ধার লাশের মধ্যে ২৪ জনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এসব লাশের নমুনা সংগ্রহ করে শনিবার বরগুনার পোটকাখালী গ্রামে খাকদোন নদীর পাড়ের গণকবরে দাফন করা হয়েছে। পরিচয় মিলেছে এমন ১৫ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে প্রশাসন।