পাবনা জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

পাবনা জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে সম্প্রতি দেওয়া জেলার বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিও স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার (১১ এপ্রিল) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় পাবনা জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ পাবনা জেলা শাখার নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে আগ্রহী প্রার্থীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতার কাছে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন কমিটি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কেউ জেলার অন্তর্গত কোনও কমিটি ঘোষণা করতে পারবেন না বলেও উল্লেখ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে কমিটি দেওয়া, নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বসহ বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত হওয়ায় জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

পাবনা জেলা কমিটি বিলুপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম। তবে তিনি অর্থনৈতিক লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘কমিটি বাণিজ্যের বিষয়টি সঠিক নয়। এমনিতেই এই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে বিলুপ্ত করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের পর ২৮ জানুয়ারি পাবনা জেলায় নতুন কমিটি ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে সভাপতি করা হয় জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিককে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় এডওয়ার্ড কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তাজুল ইসলামকে। পরে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে শিবলী সাদিক জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্ব পাওয়ায় ছাত্রলীগের সভাপতির পদ শূন্য হয়। দীর্ঘদিন সভাপতির পদ শূন্য থাকার পর ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর গঠনতন্ত্র মোতাবেক সহসভাপতি মো. ফিরোজ আলীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এই কমিটির শুরু থেকেই নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। সর্বশেষ সম্মেলন ছাড়াই ঈশ্বরদী উপজেলা, পৌরসভা ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়া, ভাঙ্গুড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে নৈতিকতা স্খলনকারীদের দায়িত্ব দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে চরম বিতর্কিত হন তারা। বিষয়গুলো নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে অভিযোগ গেলে তারা এই সিদ্ধান্ত নেন বলে ছাত্রলীগের একাংশের দাবি। ওই কমিটির বিরুদ্ধে রাস্তায় বিক্ষোভ, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন বঞ্চিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।