কুয়াকাটা সৈকতে আবারও ভেসে এলো মৃত কচ্ছপ

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আবারও ভেসে এসেছে বড় আকারের একটি মৃত মা কচ্ছপ। এ নিয়ে চলতি বছরে কুয়াকাটা সৈকতের তীরে আটটি মৃত কচ্ছপ ভেসে এলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাত ৯টায় জোয়ারের তোড়ে সৈকতের ঝাউবন পয়েন্ট এলাকায় কচ্ছপটি ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে তারা ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যদের খবর দেন।

ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্যরা জানান, কচ্ছপটির ওজন ৩০ থেকে ৩৫ কেজি হতে পারে। এটির শরীরের সামনের অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। বিশেষ করে মুখ ও পা অর্ধগলিত রয়েছে। জেলেদের জালের আঘাত কিংবা বড় কোনও ফিশিং বোটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে কচ্ছপটির মৃত্যু হতে পারে। এটি আরও দুই-তিন দিন আগে মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্য আবুল হোসেন রাজু বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ওই এলাকায় গিয়ে মৃত কচ্ছপটি তীরে এনেছি। সেটি জোয়ারে ভাসছিল।’

অপর সদস্য কেএম বাচ্চু বলেন, ‘দেখে মনে হয়েছে এটি মা কচ্ছপ। সাধারণত এ সময় ডিম দেওয়ার জন্য গভীর সমুদ্র থেকে উপকূলে আসে মা কচ্ছপ। আগামীকাল এটিকে মাটি চাপা দেওয়া হবে।’

ওয়ার্ল্ডফিস ইকোফিস-২ প্রকল্পের সহকারী জীববৈচিত্র্য গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ‘এটি মূলত জলপাইরাঙা সাগর কাছিম প্রজাতির কচ্ছপ। এর বৈজ্ঞানিক নাম লিপিডোসিলাস ওলিভেসা। এরা মূলত গভীর সাগরে বিচরণ করে। তবে এ মৌসুমের অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় ডিম দিতে ওপরের দিকে চলে আসে। আর এ সময় জেলেদের জালের আঘাতে এর মৃত্যু হতে পারে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেও কচ্ছপের মৃত্যু হতে পারে। এভাবে একের পর এক মৃত কচ্ছপ ভেসে আসায় আমরা অনেকটা উদ্বিগ্ন। কচ্ছপ সমুদ্রের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মূলত সমুদ্রকে দূষণমুক্ত করে এরা। তাই গবেষণা করে এসব কচ্ছপের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা দরকার।’

পটুয়াখালী জেলা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক তারিকুল ইসলাম জানান, কচ্ছপটি মাটিচাপা দেওয়ার জন্য বনকর্মীদের বলা হয়েছে। মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হয়েছে।