অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানুষের রাগ কমাবে: ডা. জাফরুল্লাহ

গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘প্যান্ট-শার্ট পরা লোকেরা টিসিবির ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। সুষ্ঠু নির্বাচন, সুশাসন এবং দুই কোটি পরিবারকে সামরিক দরে রেশন দেন। এ সবই করা সম্ভব। কিন্তু তা না। আপনারা করছেন অপচয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন, কিন্তু এখনও কুইক রেন্টাল কেন রেখেছেন? এইসব রাগ-ক্ষোভ কমানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দরকার। যারা মানুষের রাগ কমাবে। নির্বাচন হয়ে যাবে। নির্বাচনে যে জিতবে সে আসবে, তাতে কোনও ক্ষোভ থাকবে না।’

মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিচালিত ফারাক্কা লং মার্চের ৪৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (১৬ মে) রাজশাহীতে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিকালে রাজশাহী নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চে ফারাক্কা লং মার্চ উদযাপন কমিটি এর আয়োজন করে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সামনে কঠিন সমস্যা। শ্রীলঙ্কাকে দেখে শেখা উচিত। ১০ দিন আগেও পৃথিবীর কোনও বিশেষজ্ঞ বলেনি, শ্রীলঙ্কায় আগুন জ্বলবে। মানুষের ধৈর্যের সীমা আছে। সেই সীমা অতিক্রম করছে। দেখেন আজকে দুই কোটির বেশি পরিবার অর্ধাহারে আছে।’

জনসভায় তিনি বলেন, ‘অনেকে বলে শ্রীলঙ্কা হবে না। ক্যামনে জানেন? শ্রীলঙ্কা তো শান্তির দেশ। তাদের জাতীয় বীর নাই হয়ে গেছে। সুতরাং সাধু সাবধান। জনগণ ভুলে যাবে না। জনগণের পেটে ক্ষুধার বড় জ্বালা। বাচ্চা যদি দুধ না পায় মা সহ্য করতে পারে না, আত্মহত্যা করে। অথবা শিশুর গলা টিপে ধরে। কল্যাণকর রাষ্ট্র দরকার যেখানে আমি-আপনি সবার সমান অধিকার থাকবে। শিক্ষকরা সাহসী হন। রাস্তায় নেমে আসেন। কল্যাণকর রাষ্ট্রের জন্য সবাইকে একত্রিত হয়ে সংগ্রাম করতে হবে। সেই সংগ্রামে আপনাদের সঙ্গে আছি। যতই বয়স হোক, হুইল চেয়ারে বসে থাকলেও আমি আপনাদের সঙ্গে থাকবো।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ উল্টো বুঝবেন না। ছেড়ে দেন একটা আন্তর্জাতিকমানের সরকারের হাতে। সুষ্ঠু নির্বাচন করেন। নির্বাচনে যারা আসবে তারা থাকুক। পৃথিবীর অতীত ইতিহাস থেকে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা গ্রহণ করুন। ইতিহাসে ম্যান্ডেলার কথা ধরেন। নির্বাচিত হলেন, ক্ষমতা নিলেন না। কারণ তিনি জানতেন, এটাকে সামাল দেওয়া যাবে না। স্থিতি দরকার। মাসের পর মাস আলোচনা করেছেন।’

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন- ফারাক্কা লং মার্চ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী। বক্তব্য দেন মাওলানা ভাসানীর দৌহিত্র আজাদ খান ভাসানী, পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের জেলার সভাপতি এনামুল হক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহীর সাবেক সভাপতি ডা. ওয়াসিম হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর এনামুল হক, ড. জি এম শফিউর রহমান প্রমুখ।