ইউএনও ও এসি-ল্যান্ডের বিরুদ্ধে লুটপাটের মামলা তদন্তের নির্দেশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের ইউএনও শরিফ আহমেদ এবং এসি-ল্যান্ড মিথিলা দাসের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগে দায়ের করা মামলা ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে নাচোলের আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবীর এ আদেশ দেন।

আদেশে বলা হয়েছে, সিভিল আদালতে নালিশি জমি নিয়ে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আদালতের কোনও আদেশ ছাড়াই কেন উচ্ছেদের প্রয়োজন হলো তা আদালতের বোধগম্য নয়। এ অবস্থায় প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের জন্য তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

আদালত নাচোল থানার ওসিকে এ বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে আগামী ১৫ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১০ মে নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের উজিরপুর হাটে সরকারি জমিতে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে নাচোল উপজেলা প্রশাসন। এ সময় ৩০-৪০টি দোকানঘর উচ্ছেদ করা হয়। হাটের পাশেই দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে থাকা আরএস ১৬৬ নম্বর দাগে মামলার বাদী আব্দুর রশিদের বাড়িতেও অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। অথচ জায়গাটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এমনকি আব্দুর রশিদের পৈতৃক সম্পত্তিতে বাড়ি থাকলেও ইউএনও ও এসি-ল্যান্ডের নির্দেশে দুটি পাকা ঘর ভেঙে ফেলা হয়। অনেক অনুরোধ করলেও কোনও সুযোগ দেননি তারা। বাড়ি ভাঙার সময় ইউএনও ও এসি-ল্যান্ডের উপস্থিতিতে ২০-২২ জন লোক আব্দুর রশিদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরে ঢুকে মামলার আসামি দুরুল, নুরুল ও জেন্টু বাক্সে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নেন। ঘরের খাট, সোফাসেট, কাঁসার থালা লুট করে নিয়ে যায় তারা।

আব্দুর রশিদের দাবি, লুটপাট করা লোকজন ইউএনও ও এসি-ল্যান্ডের বাহিনী। এই কাজে তাদের পুরোপুরি সমর্থন ছিল। দুটি ঘরে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা ছাড়াও আরও কমপক্ষে ৬৩ হাজার টাকার মালামাল লুটপাট করা হয়েছে। ইউএনও ও এসি-ল্যান্ডের নির্দেশনায় ও উপস্থিতিতে এমন কাজ করা হয়েছে। তাই বিচার পেতে আব্দুর রশিদ গত বৃহস্পতিবার (১৯ মে) আদালতে নাচোল ইউএনও শরিফ আহমেদ ও এসি-ল্যান্ড মিথিলা দাস, কসবা গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলী লতিবের ছেলে দুরুল, নুরুল ও একই এলাকার মৃত হেলালের ছেলে জেন্টুর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। যাহার মামলা নং-সি আর ৮৬/২২ নাচোল।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রহমান (২) জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে আদালত মামলাটি গ্রহণ করেন। গত রবিবার আদেশের দিন ধার্য থাকলে আদালত মঙ্গলবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হুমায়ুন কবীর মামলাটি তদন্তের জন্য নাচোল থানার ওসিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ইউএনও শরীফ আহমেদ বলেন, ‘এটি এখন আদালতের বিচারাধীন বিষয়। সেহেতু এ ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করবো না।’