ডিএনএ’র ফল পেতে একমাস অপেক্ষায় থাকতে হবে স্বজনদের

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে শনাক্ত করা যায়নি এমন লাশের পরিচয় নিশ্চিতের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার ফল পেতে স্বজনদের একমাস অপেক্ষা করতে হবে। বুধবার ফরেনসিক ল্যাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

এই অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত নিহত ৪৬ জনের মধ্যে ২৬ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। বাকিদের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য স্বজনদের কাছ থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজন নিখোঁজও রয়েছেন।

সিআইডি ফরেনসিক ল্যাবের পরীক্ষক নাজমুল আলম টুটুল বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ‘ক্রাইমসিন স্যাম্পলে সংগ্রহ করা লাশের দাঁত, হাড়, চুল, নখ, টিস্যুর যেকোনও একটি নিয়ে কাজ শুরু হয়। এতে ফল আসলে অন্য উপকরণের পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ফল না পেলে অন্য উপকরণগুলো নিয়েও পরে পরীক্ষা করতে হয়। এভাবে ফল না আসা পর্যন্ত একের পর এক সব উপকরণ পরীক্ষা করা হয়, যা একটি সময়সাপেক্ষ বিষয়।’

সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবের কর্মকর্তারা জানান, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে প্রোফাইল তৈরি এবং মেলানো একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। ব্যক্তির ডিএনএ প্রোফাইলের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করতে অন্তত মাসখানেক সময় দরকার। ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেশি সময় লাগতে পারে। দুর্ঘটনার পর যাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো পুড়ে এতটাই বিকৃত হয়েছে যে চোখে দেখে বা আলামত যাচাই করে পরিচয় নিশ্চিত করা কঠিন। রেফারেন্স স্যাম্পলে লাশের স্বজনের রক্ত, লালা এবং ক্রাইম সিন স্যাম্পলে লাশের দাঁত, হাড়, চুল, নখ, টিস্যু সংগ্রহ করা হয় বলে জানান তিনি।

এদিকে, মঙ্গল ও বুধবার ২২ জনের লাশের বিপরীতে ৩৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন এমন কয়েকজনের স্বজনদের নমুনাও নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, লাশের নমুনা সংগ্রহ করেছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক চিকিৎসকরা এবং স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করছেন সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবের সদস্যরা।

ফরেনসিক ল্যাবের কর্মকর্তারা জানান, ডিএনএ’র নমুনা মেলানোর ক্ষেত্রে স্বজনদের মধ্যে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় বাবা, মা ও সন্তানদের। এর পরের পর্যায়ে ভাই-বোন এবং তাদের কোনোটিই না পেলে স্ত্রী। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই স্ত্রীকে তার সন্তানের মা হতে হবে। এ ছাড়া স্বজনদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পরিষ্কার না হলে নতুন করে তা সংগ্রহ করতে হয় বলেও জানান কর্মকর্তারা।