শিক্ষককে হত্যা: ২১ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিক্ষোভ

ঢাকার সাভারে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্র জিতুর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত এবং এতে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাভারের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকালে সাভার উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে ফেডারেশন অব কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন নামে সংগঠনের প্রায় ২১টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অংশ নেন।

মানববন্ধনে সংগঠনটির সাভার শাখার চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জিতু বলেন, ‘শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষক হত্যার মতো এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও আমাদের হতে হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকরা আজ নিরাপদ বোধ করছেন না। আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই দেরিতে হলেও ঘটনার মূল আসামি জিতুকে গ্রেফতার করার জন্য। একই সঙ্গে দাবি জানাই, দ্রুত এই মামলার বিচার কাজ শেষ করে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের। পাশাপাশি নিহত শিক্ষকের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ অতি দ্রুত ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনেরও দাবি জানাই আমরা।’ এ সময় তারা শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানান তিনি।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে হাজী ইউনুস আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনায় মূল রহস্য উদ্ঘাটন এবং আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। অভিযুক্ত জিতুর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে আর কোনও শিক্ষকের ওপর এমন ন্যক্কারজনক হামলা করার সাহস কেউ করতে না পারে।’

পরে ফেডারেশন অব কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

এর আগে বুধবার পুলিশ কুষ্টিয়া থেকে জিতুর বাবা উজ্জ্বল এবং গাজীপুর থেকে র‌্যাব জিতুকে গ্রেফতার করে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। শিক্ষক উৎপল কুমার মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ মাঠ থেকে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায় জিতু। উৎপলকে দ্রুত উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর উৎপল কুমারের ভাই অসীম কুমার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় স্কুলছাত্র জিতুকে প্রধান আসামি এবং আরও তিন-চার জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করেন।