নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের মূল্য ১৪ টাকা কমিয়ে ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। তবে নারায়ণগঞ্জে নির্ধারিত মূল্যে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে না। প্রতি লিটার সেই আগের মূল্য ১৯৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কারখানা ও ডিলার পর্যায় থেকে সয়াবিন তেলের দাম কমিয়ে বিক্রির দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু বাজারে উল্টো চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি ও খুচরা দোকানে এখনও সেই আগের দামে ১৯৯ টাকা মূল্যে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। তবে কোনও কোনও দোকানে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা মূল্যেও তেল বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে সেই সংখ্যা খুবই কম।

শহরের প্রেসিডেন্ট রোডের মুদি দোকানি আল আমিন বলেন, ‘প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৯৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন মূল্যের তেল এখনও আসেনি। আসলে দাম কমবে।’

বন্দর উপজেলার বাবুপাড়া এলাকার মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘নতুন মূল্যের তেল আসেনি, তাই আগের দামে বিক্রি করছি। খোলা সয়াবিন তেল লিটারে পাঁচ টাকা লাভে ১৯৫ টাকায় বিক্রি করছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিগু বাবুর বাজারের এক দোকানি জানান, ডিলাররা দাম না কমালে দোকানিদের কমিয়ে বিক্রি করার সুযোগ নেই। তা ছাড়া পুরনো তেল থাকতে দোকানিরা নতুন তেল কিনবেন না। কারণ তাতে অনেক লোকসান হবে।

তীর ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেলের নারায়ণগঞ্জ জেলার ডিলার মনির হোসেন বলেন, ‘সয়াবিন তেলের দাম কমিয়ে বিক্রি করছি। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৮১ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতল ৮৯০ টাকায় বিক্রি করছি।’

দাম কমানোর আর্থিক ক্ষতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোম্পানি বলেছে বিষয়টি দেখবে। বিগত সময়ে এমন পরিস্থিতিতে তারা দাম কমিয়ে নিয়েছিল, এবার কমায়নি। আমার প্রায় চার হাজার কার্টন আগের মাল আছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকা লোকসান হবে।’

রূপচাঁদা সয়াবিন তেলের জেলা ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজার হিমেল হোসেন বলেন, ‘দাম কমানোর ব্যাপারে কোম্পানির কোনও নির্দেশনা পাইনি। ফলে দুই দিন বিক্রি বন্ধ ছিল। বুধবার থেকে প্রতি লিটার রূপচাঁদা সয়াবিন তেল ১৮২ টাকা মূল্যে বিক্রি হবে।’

নিতাইগঞ্জ পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ী মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুল কাদির বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা লিটারপ্রতি ১৪ টাকা কমে সয়াবিন তেল বিক্রি করতে পারছেন না। তবে দাম কিছুটা কমেছে। এখনও নতুন মাল আসেনি। যে কারণে ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে পারছেন না।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘১৪ টাকা কমে ১৮৫ টাকায় প্রতি লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে কিনা তা দেখভালের জন্য রূপগঞ্জে সিটি গ্রুপের তীর ব্র্যান্ড এবং সিদ্ধিরগঞ্জে টি কে গ্রুপের পুষ্টি ব্র্যান্ড কারখানায় অভিযান চালিয়েছি। তারা বর্তমান মূল্য ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করে উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। পরবর্তী সময়ে কোনও অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

খুচরা বাজারে আগের মূল্যে তেল বিক্রির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি এই ঘোষণা হয়েছে। এখনও নতুন মূল্যের তেল বাজারে প্রবেশ করেনি। একটু সময় লাগবে। এরপরও কোনও অনিয়ম থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’