গণপরিবহনে চেতনানাশক খাইয়ে ছিনতাই করতো তারা

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার যাত্রীবাহী বাস ও ট্রেনে টার্গেট যাত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তারা। এক পর্যায়ে অস্ত্রের মুখে অথবা চেতনানাশক খাইয়ে করতো টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ও দামি জিনিসপত্র ছিনতাই। দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় এই চক্রের মূল হোতাসহ চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নাটোরে র‍্যাব। তারা সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা মলম পার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য।

গ্রেফতার প্রতারকচক্রের সদস্যরা হলো– মূলহোতা রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার আব্দুল্লাহপুরের আবদুস সামাদের ছেলে ফুল মিয়া (৪৮), তার সহযোগী নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকার মোবারক হোসেনের ছেলে সানোয়ার হোসেন (৫৩), পঞ্চগড় জেলার মালিপাড়ার আবদুল জব্বারের ছেলে আলমগীর (৪৬) এবং টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার বেকারকোনা এলাকার মীর আলীর ছেলে আবদুর রাজ্জাক (৫০)।

নাটোর র‍্যাব অফিসের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে নাটোর সদর উপজেলার বড়হরিশপুর বাস টার্মিনালে অভিযান চালান নাটোর র‍্যাব সদস্যরা। এ সময় ওই আসামিদের গ্রেফতার করে তাদের কাছ থেকে ৫০ পিস চেতনানাশক ওষুধ, তিনটি চাকু, নগদ ১৪ হাজার ১শ’ ২০ টাকা এবং দুই প্যাকেট চেতনানাশক ওষুধ মিশ্রিত বিস্কুট জব্দ করা হয়।

ফরহাদ হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে পরস্পরের যোগসাজশে পরিবহনের কোনও যাত্রীকে টার্গেট করে তারা। এরপর ওই যাত্রীর সঙ্গে মেতে উঠতো আলাপচারিতায়। এক পর্যায়ে ওই যাত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব বা সখ্যতা গড়ে তুলতো। এরপর কৌশলে চেতনানাশক ওষুধ মিশ্রিত বিস্কুট, পানি ও বিভিন্ন ধরনের খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করতো তাকে। প্রয়োজনে দেশীয় অস্ত্রও ব্যবহার করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই যাত্রীর টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ও দামি জিনিসপত্র লুট করে কৌশলে পরিবহন থেকে নেমে পড়তো। এতে অনেক সময় অজ্ঞান হয়ে ভুক্তভোগী যাত্রী কখনও গুরুতর অসুস্থ কখনও বা মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।   

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছিনতাই, চুরি ও হত্যা মামলা রয়েছে। এই ঘটনায় নাটোর জেলার সদর থানায় পেনাল কোড আইনের ৩২৮/৩৯৩/৩৪ ধারায় মামলা করা হয়েছে।