হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে বীর বিক্রম শওকত আলীর দাফন সম্পন্ন

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী সরকার বীর বিক্রমের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার চিলমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। এর আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

জানাজায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ অংশ নেন– কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, নবাগত পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলী, সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুসহ জেলার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম সোমবার (২২ আগস্ট) ভোর ৫টায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন।

শওকত আলী সরকার ১৯৪৮ সালে চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়ারী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার  মায়ের নাম শরিতুজ নেছা, বাবার নাম ইজাব আলী সরকার।

শওকত আলী সরকার ‘বীর বিক্রম’ খেতাবপ্রাপ্ত একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের সাবসেক্টর মাইনকারচরের অধীন কুড়িগ্রামের রৌমারী-চিলমারী অঞ্চলে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন। ওই সেক্টরের আবুল কাশেম চাঁদ কোম্পানির সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন তিনি। ৭১ সালের ১৩ নভেম্বর উলিপুরের হাতিয়া যুদ্ধে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। শওকত আলী বীরত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধ চালিয়েছিলেন। এজন্য পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে তিনি ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অবদানের কারণে পাকবাহিনী শওকত আলীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চিলমারী থানায় মামলা করেছিল বলে জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করে।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী শওকত আলী সরকার চিলমারী উপজেলা পরিষদের পাঁচবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। উপজেলা পরিষদ চালুর পর থেকেই তিনি চিলমারী উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া প্রায় ৩৫ বছর ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।