মেয়েকে হত্যার বিচার চেয়ে বাবার সংবাদ সম্মেলন

টাঙ্গাইলে রূপা আক্তার নামে এক নারীকে হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেয়ের হত্যার বিচার এবং পরিবারের নিরাপত্তার দাবিতে বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রূপার বাবা সানোয়ার হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাসাইল উপজেলার কাউলজানী মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সানোয়ার লিখিত বক্তব্যে জানান, কালিহাতীর তেজপুর গ্রামের মোজাম্মেল তালুকদারের ছেলে মিঠুন তালুকদারের সঙ্গে প্রায় আট বছর আগে রূপার বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিদেশ যাওয়ার জন্য মিঠুনকে দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়। বিদেশ গিয়ে এক বছর পর দেশে ফেরেন মিঠুন। এরপর মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময় যৌতুক দাবিতে রূপাকে মারধর করতেন তিনি। বিষয়টি কাউকে বললে অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকি দেওয়া হতো। এক পর্যায়ে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটিয়ে রূপাকে বাবার বাড়ি আনা হয়।

সানোয়ার হোসেন আরও জানান, বিচ্ছেদের প্রায় ছয় মাস পর আবার রূপাকে বিয়ে করেন মিঠুন। দেড় মাস সংসার করার পর যৌতুকের দাবিতে পুনরায় মারধর শুরু করেন। চলতি বছরের ১৭ মার্চ মিঠুনসহ তার পরিবারের লোকজন রূপাকে মারধর করেন। ওইদিন রাতের কোনও এক সময় রূপাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন গিয়ে দেখেন লাশ উঠানে পড়ে রয়েছে। সে সময় দেখা যায়, রূপার বাঁ হাতের কব্জির রগ কাটা। এ ঘটনায় কালিহাতী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পুলিশ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের অপেক্ষা করতে বলে। পরে মিঠুনকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে কালিহাতী থানার এসআই আল আমিনের কাছে গেলে তিনি দুই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পাইনি। এমনকি মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে মিঠুনের পরিবার। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সুষ্ঠু তদন্ত করে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করার বিষয়ে জানতে চাইলে কালিহাতী থানার এসআই আল আমিন বলেন, ‘তাদের কাছে কোনও টাকা চাওয়া হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও দেওয়া হয়েছে।’

টাঙ্গাইলের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই ফরিদ মিয়া বলেন, ‘দায়িত্ব পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’