ঘড়ির কাটায় রাত তখন ৩টা। এ সময়টাতে সবাই গভীর ঘুমের মধ্যে থাকে। তবে বুধবার দিবাগত রাতের এ সময়টাতে মিরসরাইয়ের উত্তর গড়িয়াইশ গ্রামের কারও চোখে ঘুম ছিল না। অনেক দূর থেকেও কানে ভেসে আসছিল কান্না আর আহাজারির আওয়াজ।
আরও খবর: মীরসরাইয়ে সিএনজি অটোরিকশায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা, নিহত ৪
ওই রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের রায়পুর এলাকায় বেপরোয়া গতির কাভার্ডভ্যানের চাপায় ওই গ্রামের শামসুদ্দিন ড্রাইভারের দুই ছেলে সিএনজি অটোরিকশা চালক শেখ ফরিদ (২৬) ও সুমন (২৬) নিহত হন। তাদের দেখতে গ্রামবাসী, আত্মীয়-স্বজন এবং সিএনজি অটোরিকশা চালকরা সারারাত ওই বাড়িতে ভিড় করছেন। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে আকাশ-বাতাস।
শেখ ফরিদের তাসফিয়া (৫) ও শেখ রাহিন (২) এবং সুমনের নিশাত (৭) ও মারিয়া (৪) নামে দুটি করে সন্তান রয়েছে।
সন্তানদের হারিয়ে নাতি-নাতনিদের কথা ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন বাবা শামসুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার দুই ছেলে ফরিদ এবং সুমনসহ সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাই। প্রতিদিন রাত ১০টার মধ্যে ছেলেরা গাড়ি গ্যারেজে রেখে বাড়িতে চলে আসে। আজ ১১টার পরও তারা বাড়ি আসেনি। রাত সাড়ে ১১টার সময় খবর পাই কাভার্ডভ্যানের চাপায় আমার সোনামণিরা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। এখন তাদের পরিবার কে দেখবে? তাদের সন্তানদের কে দেখবে?’ এসব বলতে বলতে তিনি বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ের চট্টগ্রামমুখী অংশের রায়পুর এলাকায় বেপরোয়া গতির কাভার্ডভ্যানের চাপায় তিন সিএনজি অটোরিকশা চালক, একজন নাইটগার্ড ঘটনাস্থলে নিহত হন। সে সময় পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচ জন আহত হন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।