লাইভ চলাকালে সাংবাদিকের ওপর হামলা: আসামি বিএমডিএ কর্মচারীর পদোন্নতি

রাজশাহীতে লাইভ সম্প্রচার চলাকালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের দুই সাংবাদিকের ওপর হামলায় অভিযুক্ত এজাহারভুক্ত এক আসামিকে পদোন্নতি দিয়েছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিএমডিএ’র সচিব শরিফ আহম্মেদ ৩১ জনের পদোন্নতির আদেশে সই করেন। ওই তালিকার ১৪ নম্বরে আছে সাংবাদিকদের ওপর হামলা মামলার আসামি সেলিম রেজার নাম! যা নিয়ে বিস্ময়  ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিক নেতারা।

জানা গেছে, সেলিম রেজাকে বিএমডিএ’র সদর দফতরের অফিস সহায়ক থেকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদের দফতরের অফিস সহায়ক ছিলেন। এই মামলার প্রধান আসামি নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ পুলিশ বলছে, খোঁজ পেলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।

সাংবাদিক পেটানোর মামলার আসামিকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে বিএমডিএ’র সচিব শরিফ আহম্মেদ জানান, সচিব তো শুধু অফিস আদেশে স্বাক্ষর করেন। সিদ্ধান্ত আগেই হয়। এই বিষয়ে নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন সচিব। কিন্তু নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশিদ ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে হামলার শিকার এটিএন নিউজের রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব বলেন, ‘আমার বোধগম্য হচ্ছে না, একজন ফৌজদারি মামলার আসামি কীভাবে পদোন্নতি পায়? তারা কী আইনের ঊর্ধ্বে? একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কী ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা ও জবাবদিহিহীনতার মধ্যে থাকলে এমনটি ঘটতে পারে!’

রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান শ্যামল বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর এমন অন্যায় আমরা মেনে নেবো না। মামলার সব আসামিকে যদি গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনা হয়, তবে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।’

উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর বিএমডিএ কার্যালয়ে হামলার শিকার হন এটিএন নিউজের রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপারসন রুবেল ইসলাম। সরকার নির্ধারিত নতুন সময় অনুযায়ী বিএমডিএ কর্মকর্তারা অফিসে আসেন না, এমন দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ) করার সময় তারা হামলার শিকার হন। অভিযোগ পাওয়া যায়, নির্বাহী পরিচালকের নির্দেশে কর্মচারীরা এ হামলা চালান। এ সময় দুই সাংবাদিককে মারধর করা হয় এবং ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন ভেঙে ফেলা হয়।

এ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিএমডিএ’র দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে রাতে সাত জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন বুলবুল হাবিব। এরপর পুলিশ সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুজনকে গ্রেফতার করলেও অন্যরা এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এর প্রতিবাদে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন রাজশাহীর সাংবাদিকরা।