পুকুর পাড়ে মোটরসাইকেল, রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ব্যবসায়ী  

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে জ্যোতিশ চন্দ্র সরকার (৫৬) নামে এক ব্যবসায়ী নিখোঁজ হয়েছেন। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি আসার পথে নিখোঁজ হন তিনি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি স্বজনরা।

সোমবার সকালে বাড়ির অদূরে তরফবাজিত এলাকার ভাই ভাই রাইস মিলের পাশের পুকুর পাড়ে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও পায়ের স্যান্ডেল দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা এসে পুকুরসহ আশপাশের ধানক্ষেতে খোঁজাখুঁজি করে তাকে পায়নি। এ খবর ছড়িলে পড়লে ওই এলাকায় ভিড় জমান শত শত নারী-পুরুষ।

নিখোঁজ জ্যোতিশ চন্দ্র সরকার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের তরফবাজিত গ্রামের মৃত গংগাধর সরকারের ছেলে। তিনি নারিশ পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটিডের একজন ডিলার। সাদুল্লাপুর বাজারের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স সংলগ্ন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

হঠাৎ করে জ্যোতিশ চন্দ্র সরকার নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা রহস্যজনক বলছেন স্থানীয়রা। তবে মোটরসাইকেল ও স্যান্ডেল রেখে নিখোঁজের এমন ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। স্থানীয়রা বলছেন, সকালে পুকুর পাড়ে তার মোটরসাইকেল দেখতে পাওয়া যায়। মোটরসাইকেলে হেলমেট এবং পাশেই তার পায়ের স্যান্ডেল পড়ে ছিল। তাৎক্ষণিক পুকুরের পানিতে নেমেও তাকে খোঁজাখুঁজি করেন স্থানীয়রা।

আর জ্যোতিশ চন্দ্রের হঠাৎ মোবাইল ফোন বন্ধ এবং বাড়ি না ফেরার ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা এখন চরম আতঙ্ক-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। কান্নায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা। তারা বলছেন, কারও সঙ্গে তার বিরোধ নেই। তবে তাকে অপহরণ কিংবা গুম করা হয়েছে ধারণা তাদের। দ্রুত তাকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সহযোগিতা কামনা করেন পরিবারের সদস্যরা।

জ্যোতিশ চন্দ্রের ছেলে তন্ময় বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে দোকান থেকে বাড়ির পাশে এসে বাবা ওষুধ কেনার জন্য আবার সাদুল্লাপুর শহরে যান। ওষুধ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বাবাকে কেউ অপহরণ নাকি হত্যা করেছে তাও অজানা তার।’   

এদিকে, হঠাৎ করে ব্যবসায়ী নিখোঁজের ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। কেউ তাকে অপহরণ কিংবা ঘুম করেছেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ‘পুকুর পাড়ে রেখে যাওয়া তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও স্যান্ডেলসহ ঘটনাস্থলের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা তাকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।’