দ্বিতীয় দিনের ধর্মঘটে ভোলার লঞ্চযাত্রীদের ব্যাপক দুর্ভোগ

১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকা ধর্মঘট দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। এতে বন্ধ রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটের লঞ্চ চলাচল।

ধর্মঘটে সারা দেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে দ্বীপজেলা ভোলা। জেলার হাজার হাজার যাত্রী আটকে পড়েছেন। ঘাটগুলোয় যেন সুনসান নীরবতা। নেই হকারদের হাঁক-ডাক, নেই কোলাহল। ঘাটেই নোঙর করা কয়েকটি লঞ্চ। শ্রমিকদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। কোনও কোনও যাত্রী ঘাটে এসে নৌযান না পেয়ে ফিরে গেছেন। কেউ আবার বিকল্প ব্যবস্থায় গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

সোমবার (২৮ অক্টেবর) সকাল থেকে ভোলার ইলিশা, ভেদুরিয়া লঞ্চঘাটসহ জেলার কোনও ঘাট থেকে অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার রুটের লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এসব ঘাটে অনেক যাত্রী আসলেও তারা গন্তব্যে যেতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন। যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত ফিরে গেছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন নারী ও শিশুরা।

যাত্রী সামাদ রবিন বলেন, ‘ভোলায় এসেছিলাম বেড়াতে। এখন বরিশাল যাবো, কিন্তু কোনও লঞ্চ পাচ্ছি না। ছোট ট্রলারে কীভাবে যাবো। এতে তো অনেক ঝুঁকি।’

যাত্রী জুয়েল বাবু ও আশিক বলেন, ‘আমরা জানতাম না যে লঞ্চ ধর্মঘট চলছে। ঘাটে এসে দেখি এমন অবস্থা। এখন চরম দুর্ভোগে পড়েছি।’

এদিকে, ভেদুরিয়া ঘাটে দেখা গেছে, কিছুটা ভিন্ন চিত্র। ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে এসব নৌযানে ভাড়া নিচ্ছে অনেক বেশি।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন বরিশাল বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ আবুল হোসেন বলেন, ‘১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। লঞ্চমালিক পক্ষ আমাদের এখনও ডাকেনি। তারা দাবি না মানলে আমাদের কর্মবিরতি চলবে।’

শ্রমিকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ন্যূনতম বেতন ২০ হাজার টাকা, শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র প্রদান, শ্রমিকদের নিরাপত্তা, নৌদুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, চাঁদাবাজি বন্ধ, রাতে নৌযান চলাচল শিথিল করা, ভারতগামী জাহাজ ল্যান্ডিং করার পাস এবং কল্যাণ তহবিল গঠন।