এসএসসির ফরম পূরণে ১০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ

শরীয়তপুর ডামুড্যার সিড্যা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে এসএসসির ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাছিবা খান।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর ডামুড্যা উপজেলার সিড্যা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে এ বছর তিন বিভাগে এসএসসি মূল্যায়ন পরীক্ষা দিয়েছে ৭৩ জন। এর ভেতরে মাত্র তিন জন সব বিষয় পাস করেছে। বাকি সব শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয় অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার ফলাফলের কাগজ বোর্ডে অথবা দেয়ালে সাঁটানোর কথা থাকলেও তা করা হয়নি। যারা সব বিষয় পাস করেনি তাদের কাছ থেকে এসএসসির ফরম পূরণে সরকার নির্ধারিত বোর্ড ফি তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন অজুহাতে ৯ থেকে ১০ হাজার করে টাকা আদায় করছেন প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান তোতা। অতিরিক্ত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে ওই বিদ্যালয়ের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা আবেদন করলেও তা মঞ্জুর করা হয়নি। টাকা দিতে না পারা শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ফরম পূরণ করতে পারেনি। এতে পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের। তারা চান বোর্ডের নির্ধারিত ফি দিয়ে ফরম পূরণ করতে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানায়, তাদের জোর করে ফেল করানো হয়েছে। তারা পরীক্ষার ফল দেখতে চাইলে সহকারী প্রধান শিক্ষক গালমন্দ করে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন। তাদের জানানো হয়েছে, ১০ হাজার টাকা দিলে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে, তা না হলে হবে না। তাই অনেকের ফরম পূরণ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে ধার-দেনা করে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করেছে। এখানকার বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিম্ন আয়ের পরিবারের।

ফরম পূরণ করতে না পারা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, এত টাকা দিয়ে তাদের পক্ষে ফরম পূরণ করা সম্ভব না। টাকা দিতে না পারায় তাদের সন্তানদের এখনও ফরম পূরণ করতে পারেনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান তোতার কাছ থেকে বক্তব্য আনতে গিলে তিনি বক্তব্য না দিয়ে সেলফি তোলার অফার দিয়ে দ্রুত সরে পড়েন।

সিড্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল হাদী জিল্লু বলেন, ‘সিড্যা উচ্চ বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমার জানা ছিল না। বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী টাকা নেওয়া এবং সব শিক্ষার্থীর ফরম পূরণের ব্যবস্থার আমি চেষ্টা করবো। অতিরিক্ত টাকা নেওয়া খুবই দুঃখজনক।’

অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’