‘স্যার ডাকতে হবে তাই সাহেবরা আমার ফল পাল্টে দিয়েছেন’

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের নির্বাচনে পরাজয়ের পর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম বলেছেন,‘আমি অশিক্ষিত, আমি এমপি নির্বাচিত হলে আমাকে স্যার ডাকতে হবে। দেশের সম্মান যেতো; তাই ওইসব সাহেবরা আমার ফল পাল্টে দিয়েছেন। নির্বাচিত হলে ওই সাহেবদের দেখিয়ে দিতাম আমিও পারি।’  বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম বলেন,‘নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেও আমাকে অন্যায়ভাবে পরাজিত ঘোষণা করা হয়েছে। তাই আমি এ ফল বর্জন করছি। শিগগিরই আদালতের আশ্রয় নেবো।’  

‘আজকে সারাদেশের মানুষ আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। আমার মনে হয়েছে, আমি প্রধানমন্ত্রীর ভোট করছি। তখন গর্বে আমার বুক ভরে গেছে। সবার যে ভালোবাসা পেয়েছি তা ভুলবার নয়।’

এ নির্বাচনের ফলাফল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে হিরো আলম বলেন, ‘এমন কারচুপির ভোট হলে ভবিষ্যতে মানুষ নির্বাচন করার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলবেন।’

আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ ভালো ছিল। তবে নন্দীগ্রামের ফল ঘোষণা করার সময় তার সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৯টির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পরে বাকি ১০ কেন্দ্রের ফল আলাদা ঘোষণা না করে মোট ফলাফল ঘোষণা করেছে। কেন ওই ১০ কেন্দ্রের ফলাফল একসঙ্গে ঘোষণা করা হলো? এখানেই কারচুপি করা হয়েছে। সব বুথে এজেন্ট থাকলেও প্রিসাইডিং অফিসার তাদের ফলাফলের কপি দেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অনেক কষ্টে নিজেকে গড়ে তুলেছি। আমি মাত্র ৪-৫ জন কর্মী, একটি পিকআপ, দুটি মাইক নিয়ে, দুটি আসনের মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। জনগণ আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছে। আওয়ামী লীগের ভোটার হলেও অনেক বলেছেন, তারা একতারা প্রতীকে ভোট দিয়েছেন। সবাই বলেছেন, আপনি পাস করেছেন। ভোটাররাও ভোট দিয়েছেন, তাহলে ওইসব ভোট কোথায় গেলো? আওয়ামী লীগের লোকজনও তানসেনকে (বিজয়ী) ভোট দেননি। অথচ তাকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এ অন্যায়ের প্রতিকার পেতে আদালতে রিট করবো।’

হিরো আলম বিপুল পরিমাণ ভোট পাওয়ার জন্য ভোটার এবং বিশেষ করে সাংবাদিকদের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আপনাদের ভালোবাসা এবং সহযোগিতা না পেলে আজ  এ পর্যায়ে আসতে পারতাম না।’

এদিকে, দিনভর ইভিএমে ভোটগ্রহণ শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী জেলা জাসদের সহ-সভাপতি একেএম রেজাউল করিম তানসেন বিজয়ী হয়েছেন। ১১২ কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন, ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল ইসলাম আলম  ওরফে হিরো আলম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট।

নির্বাচনে মোট নয় জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিন লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন ভোটারের মধ্যে ৭৮ হাজার ৫৭০ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোট সংগ্রহের হার ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।