বগুড়ায় আর হবে না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ?

দেশের আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেট ভেন্যু ‘বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম’ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগিতার দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ম্যাচ বন্ধ থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে, এ খবরে জেলার ক্রীড়ামোদীদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা বিসিবি কর্তৃপক্ষের কাছে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বিসিবির ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল জানান, এখান থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিযুক্ত ভেন্যু ম্যানেজারসহ ১৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। মালামালসহ তাদের শনিবারের মধ্যে ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। এখানে তিনি ছাড়াও দুজন কিউরেটর, ছয় জন গ্রাউন্ডসম্যান ও আট জন ক্লিনার-নৈশপ্রহরী কর্মরত আছেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামকে বুধবার বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়। বৃহস্পতিবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিবকে পাঠানো বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ করছে। সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট লিগ বা টুর্নামেন্ট আয়োজন করে আসছে। বিগত কয়েক বছর বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগিতার ফলে শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে বিসিবি কর্তৃক নিয়মিতভাবে টুর্নামেন্ট বা লিগ আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবি ওই স্টেডিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় দায়িত্ব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ ভেন্যুতে কর্মরত বিসিবির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ইতোমধ্যে অন্য ভেন্যুতে বদলি করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলন বলেন, ‘২০ বছর (আসলে ১৭ বছর) এ ভেন্যুতে খেলা দেওয়া হয় না। এর প্রতিবাদ করায় ভেন্যুটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিরুদ্ধে আনা অসহযোগিতার অভিযোগটি ভিত্তিহীন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্টেডিয়ামে ম্যাচের আয়োজন দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু বিসিবির দায়িত্বশীলদের উদাসীনতার কারণেই সেটি সম্ভব হয়নি।’

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, পদাধিকারবলে তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থা সভাপতি। তাই তিনি এ দায় এড়াতে পারেন না। তার স্বল্প সময়ে সবকিছু জানা সম্ভব হয়নি। বিসিবি কখনও জানায়নি যে জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে সহযোগিতা পাচ্ছে না। তিনি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য, বিসিবি সভাপতিকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২০০৬ সালের পর এ ভেন্যুতে আন্তর্জাতিক কোনও ম্যাচের আয়োজন করা হয়নি। আইসিসির স্বীকৃতি পাওয়ার পর এখানে একটি টেস্ট ও পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচের আয়োজন করা হয়।