ইলিশ ধরা বন্ধে অভিযানের সময় হামলা, মাথা ফেটেছে পুলিশ পরিদর্শকের

বরিশালের হিজলা উপজেলায় মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধে পুলিশ ও মৎস্য অধিদফতরের যৌথ অভিযানে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় জেলেরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তাদের।

জানা গেছে, হামলায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এমএম পারভেজ, হিজলা নৌ-পুলিশের পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দেসহ ১৬ জন আহত হয়েছেন। এ সময় সাত রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। শুক্রবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ‍উপজেলার ধুলখোলা এলাকায় মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে হিজলা নৌ পুলিশের পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দের অবস্থা গুরুতর। তার মাথায় ছয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।
 
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এমএম পারভেজ বলেন, ‘মাছ শিকার বন্ধে নৌ-পুলিশ ও মৎস্য অধিদফতর যৌথ অভিযান চালায়। এ সময় ১৫-২০টি ট্রলার নিয়ে জেলেরা এসে পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালান। বৈঠা ও বাঁশ দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করেন। হামলা প্রতিরোধে পুলিশ সাত-আট রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে জেলেরা সরে যান। হামলায় নৌ পুলিশ পরিদর্শকের মাথা ফেটে গেছে। এ ছাড়া আমিসহ আরও ১৫ জন আহত হয়েছি। সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা কাজী রুবাইয়া বলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দের মাথায় ছয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। অন্যদেরও চিকিৎসা চলছে। তবে সবাই শঙ্কামুক্ত।’ 
 
হিজলা ‍উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক হাওলাদার বলেন, ‘সরকারের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা হামলার শিকার হয়েছেন। যারা এ হামলায় জড়িত তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
 
পুলিশ ও মৎস্য বিভাগ জানায়, ইলিশসম্পদ সুরক্ষায় ১ মার্চ থেকে মেঘনা নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় অভয়াশ্রমসহ উপকূলের পাঁচটি ইলিশ অভয়াশ্রমে দুই মাস সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদফতর। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মেঘনায় মাছ শিকার করছেন কিছু জেলে।

বৃহস্পতিবার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন মেঘনা নদীর বিভিন্ন অংশে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মাছ ধরা অবস্থায় ২১ জন জেলেকে আটক করেন নৌ পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা। শুক্রবার বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাদের। এ ঘটনার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযানে হামলা চালান জেলেরা।

এ বিষয়ে হিজলা থানার ওসি ইউনুস মিঞা বলেন, ‘হামলা প্রতিরোধে পুলিশ সাত-আট রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে জেলেরা পালিয়ে যান। তবে এ ঘটনায় নৌ পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে। হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’