ফিরলেন অপহরণের শিকার ৭ জন   

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ায় পাহাড়ি অঞ্চলে অপহরণের শিকার সাত জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ মার্চ) বিকালে টেকনাফের বাহারছড়া জাহজপুরা দক্ষিণ পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। তবে অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের দাবি, সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা ছাড়া পান। 

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে টেকনাফের জাহজপুরা পাহাড়ি এলাকা থেকে ওই সাত জনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয়।

ফেরত আসা অপহৃতরা হলেন– উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা গ্রামের বাসিন্দা জাবরুল ইসলাম, ফজল করিম, গিয়াস উদ্দিন, রশিদ আলম, আরিফ উল্লাহ, জাফর আলম।

এ বিষয়ে অপহরণের শিকার হওয়ার পর ফিরে আসা জাফর আলমের ছেলে কলিম উল্লাহ বলেন, ‘আমার বাবাকে উদ্ধার করা হয়েছে। চৌকিদার ইসহাকের মাধ্যমে মুক্তিপণের ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। বাবাকে অনেক মারধর করেছে। উদ্ধার হওয়ার পর বাবাকে পুলিশ নিয়ে গেছে।’ 

অপহৃত হওয়ার পর ফিরে আসা ফজল করিমের স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামীকে করা উদ্ধার হয়েছে৷ তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’ 

তবে পুলিশ বলছে, বিশেষ অভিযান চালিয়ে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়েছে। টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, ‘দুর্গম পাহাড়ে জেলা গোয়েন্দা টিমসহ আমাদের সাঁড়াশি অভিযানে কলেজছাত্রসহ অপহৃত সাত জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

‘উদ্ধাকৃতদের আমরা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করা হবে। তবে মুক্তিপণের বিষয়টি জানা নেই।’ 

এ বিষয়ে টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের  (ইউপি) সদস্য মোহাম্মদ রফিক বলেন, ‘পুলিশের প্রচেষ্টায় সাত জনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মুক্তিপণ দেওয়ার বিষটি আমিও শুনেছি। তবে এটির কোনও সত্যটা নেই। কিন্তু রমজানকে সামনে রেখে এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

এদিকে, গত ছয় মাসে টেকনাফের পাহাড়ে ৪৯ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৭ জন রোহিঙ্গা নাগরিক এবং ৩৩ জন স্থানীয় বাসিন্দা। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ দুই শিশুকে অপহরণের ৮ ঘণ্টা পর ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয় অহরণকারীরা। এর আগে গত ৮ জানুয়ারি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় ক্ষেত পাহারারত চার কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তারা ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফেরেন জানা যায়। এ ছাড়া গত ১৮ ডিসেম্বর টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা এলাকার একটি পাহাড়ের ভেতর খালে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন আট ব্যক্তি। পরে তারাও ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসেন বলে জানা যায়।