আ.লীগের ২ পক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান গুরুতর আহত

পটুয়াখালীর বাউফলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের একই সময়ে দেওয়া কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার গুরুতর আহত হয়েছেন।  শুক্রবার ( ১৭ মার্চ) দুপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে কর্মসূচি পালনের সময় বাউফল উপজেলা পরিষদ ও আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষ চলে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) আ স ম ফিরোজ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে পুলিশ। 

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে উপজেলার আবদুল মোতালেবসহ ছয় জনকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল  কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সকাল ৯টার দিকে আনন্দ মিছিল নিয়ে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের সমর্থকরা বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় জনতা ভবন এলাকায় অবস্থান করেন। এদিকে সকাল ১১টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদার এবং তার কর্মী-সমর্থকরা বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে আনন্দ র‌্যালি ও মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। মিছিলটি উপজেলা পরিষদ ত্যাগ করলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে দলীয় কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। সে সময় মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলা চালান সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের সমর্থকরা। পরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। পরে ইটের আঘাতে বাউফল থানার ওসি আল মামুন, উপপরিদর্শক (এসআই) এমএ হাসান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)  মো. হুমায়ন কবির ও মো. শাহিন এবং কনস্টেবল আবু রাহাত ও মো. রবিউল আহত হয়েছেন। 

এ ঘটনায় বাউফল উপজেলা সদরে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সোয়েব মাহমুদ জানান, মোতালেব হাওলাদারের শরীরে বিভিন্ন অংশে দেশি অস্ত্র ও লাঠির আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়াও ছয় জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতদের এখানেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠানের ব্যপারে দুপক্ষকে একসঙ্গে বসানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা রাজি হননি। পরে দুই পক্ষকেই সহ-অবস্থানের অনুরোধ করা হয়েছিল। তারা আমাকে কথা দিয়েছিলেন শান্তিপূর্ণ  কর্মসূচি পালন করবেন। কিন্তু তারা কথা রাখেননি। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। ইটপাটকেল নিক্ষেপে তিনিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেব নিজ দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।