বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ আনতে গিয়ে লাশ হলেন আফসানা

মাদারীপুরের শিবচরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের একজন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফসানা মিমি (২৬)। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগ থেকে এমএস করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএস সনদ আনতে যাওয়ার পথেই আফসানা নিহত হয়েছেন জানিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে চিৎকার করে আর্তনাদ করছেন আফসানার মা কানিজ ফাতেমা। আশপাশের মানুষ জড়ো হয়ে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কোনোভাবেই তাকে শান্ত করা যাচ্ছে না।

মায়ের সঙ্গে আহাজারি করে ‘আফসানা তুই ফিরে আয়, আমি কাকে নিয়ে থাকবো!’ বলতে বলতে মূর্ছা যাচ্ছেন আফসানার ছোট বোন রুকাইয়া ইসলাম রূপা।

রবিবার সকালে মা কানিজ ফাতেমা ও ছোট বোন রুকাইয়া ইসলাম রূপা গোপালগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু কলেজের সামনে থেকে আফসানাকে ইমাদ পরিবহনের বাসে উঠিয়ে দেন। ওই বাসে ঢাকা পৌঁছে সেখান থেকে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল আফসানার।

আফসানার বাবা আবু হেনা মোস্তফা কামাল সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। ১২ বছর আগে তিনি মারা যান।

জানা গেছে, আফসানা গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক (সম্মান) শেষ করে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স শেষ করেন। আজ সনদ তুলতে রওনা হন তিনি।

শিবচর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নিহত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৪ জনের মরদেহ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে রবিবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন।

আহতদের মধ্যে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ১২ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাত জন ভর্তি আছেন জানা গেছে। বাকিরা শিবচরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

তবে একটি সূত্র জানায়, আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে দুই জন মারা যায়। এ ছাড়া শিবচরে ঘটনাস্থলে ১৪ জন এবং শিবচরের বিভিন্ন হাসপাতালে তিন জনসহ মোট ১৯ জন নিহত হন।