দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে সোহান হত্যার রহস্য উদঘাটন, ২ কিশোর গ্রেফতার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দৌলতদিয়া যৌনপল্লি এলাকায় মো. সোহান শেখ (২০) নামে এক তরুণকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (২০ মার্চ) আদালতের মাধ্যমে তাদের শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। 

এর আগে রবিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা ১৭ বছর বয়সী দুই কিশোর। তাদের বাড়ি দৌলতদিয়া যৌনপল্লি সংলগ্ন এলাকায়। 

সোমবার (২০ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দৌলতদিয়ায় বেসরকারি সংস্থা মুক্তি মহিলা সমিতির নির্মাণাধীন ভবনের ভেতর থেকে বালুচাপা দেওয়া অবস্থায় সোহান শেখের লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি দৌলতদিয়া সিদ্দিক কাজী পাড়ার আলামিন শেখের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, গ্রেফতার এই দুই কিশোরের একজনের সঙ্গে নিহত সোহানের বাকবিতণ্ডা হয়। তুচ্ছ একটি বিষয় নিয়ে দৌলতদিয়া কেকেএস স্কুল মাঠে তাকে মারধরও করেন সোহান। এসময় অন্যজনকে মোবাইলফোনে ‘চোর’ ও ‘মাদকসেবী’ বলে গালমন্দ করেন তিনি। এই ক্ষোভেই দুই কিশোর তাদের বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে সোহানকে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ মার্চ রাত ৩টার দিকে যৌনপল্লির এক দোকান থেকে সোহানকে ডেকে নিয়ে যায় তারা। যৌনপল্লি সংলগ্ন মুক্তি মহিলা সমিতির নবনির্মিত ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে কাঠের টুকরা ও ইট দিয়ে মাথাসহ শরীরে আঘাত করে। তাদের কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে গলা, বুক, চোখ, কানসহ বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে বালু ও ইট চাপা দিয়ে রেখে যায়। পরদিন বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, গত শনিবার (১৮ মার্চ) ভোরে অভিযান চালিয়ে সোহানের মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়। পরদিন রবিবার (১৯ মার্চ) অভিযান চালিয়ে কালুখালীর হরিণবাড়ীয়া প্রামানিক পাড়া থেকে দুই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের সঙ্গে নিয়ে দিনভর অভিযান চালিয়ে বিকেলে যৌনপল্লির সংলগ্ন একটি বাড়ির পাশ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়। 

ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।’